বহু শিশু যথাসময়ে কথা বলতে শেখে না। অনেকেই ভাবেন, এরা বুঝি অটিজমে আক্রান্ত। ব্যাপারটি তেমন নাও হতে পারে। কথা দেরিতে বলার বহু কারণ আছে।
এর আগে কিছু লক্ষণ দেখে বুঝতে পারবেন আপনার শিশুর কথা বলতে দেরি হচ্ছে। লক্ষণগুলো হলো-
► ১২ মাস বয়সে শিশু কোনো অঙ্গভঙ্গি করছে না। যেমন ইশারা করা বা টা-টা করে হাত নাড়ানো।
► ১৮ মাস বয়সেও কণ্ঠের ব্যবহার বা কোনা শব্দ করার চেয়ে অঙ্গভঙ্গি বা ইশারা করতেই পছন্দ করছে।
► শব্দ বলতে অসুবিধা হচ্ছে।
► সহজ কথা বুঝতেও শিশুর কষ্ট হচ্ছে।
► দুই বছর বয়সে কথা বুঝতে পারছে কিন্তু নিজে সঠিকভাবে কোনো শব্দ উচ্চারণ করতে পারছে না।
► কয়েকটি শব্দ বার বার বলছে কিন্তু তাদের প্রয়োজনের কথা বলতে পারছে না।
► কোনো সহজ নির্দেশনা বুঝতে পারছে না।
► অস্বাভাবিক শব্দ করছে।
► বাক্য গঠন করতে না পারা। তিন বছর বয়সেও ছোট ছোট বাক্য বলতে না পারা।
যেসব কারণে শিশু দেরিতে কথা বলছে
শারীরিক এবং মানসিক দুই কারণেই শিশু কথা কম বলে থাকে। যেমন-
► ওরাল-মোটর বা মৌখিক সমস্যা থাকতে পারে। যদি শিশুর মস্তিষ্কের কোনো অংশে সমস্যা থাকে তাহলে কথা বলতে অসুবিধা হয়। এই কারণে শিশু ঠোঁট, জিহ্বা এবং চোয়াল এর মধ্যে সমন্বয় করতে পারে না।
► শিশু কানে শুনতে না পেলে কথা বলতে পারে না। তাই শিশু শব্দে সাড়া দেয় কিনা খেয়াল করুন।
► কানে যদি ঘা হয়ে থাকে তাহলেও শিশুর কথা শুনতে এবং বলতে অসুবিধা হয়।
► স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা বা অনেক সময় নিয়ে মোবাইল, টেলিভিশন দেখার কারণেও কথা বলতে দেরি হতে পারে। তাছাড়া শিশুর সঙ্গে কথা বলার লোক বা সমবয়সী কারো সঙ্গে না মেশার কারণেও এই সমস্যা হতে পারে।
যা করতে পারেন
যেসব শিশুর দেরিতে কথা বলছে তাদের সারিয়ে তুলতে বাবা-মার ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বাবা-মা শিশুকে সাহায্য করতে পারেন যেভাবে-
► শিশুর সঙ্গে বেশি বেশি কথা বলুন। সমবয়সী শিশুদের সঙ্গে মেলামেশা করতে দিন। মোবাইল, টেলিভিশন দেখার সময় কমিয়ে দিন।
► ছোট ছোট গল্পের বই পড়ে শোনান। শিশুকেও পড়ার জন্য উৎসাহিত করুন।
► সারাদিন কথা বলুন। যেমন খেতে গেলে খাবারের নাম বলুন, কিভাবে রান্না করলেন বা কোথায় খাবার কিনতে পাওয়া যায় এসব বিষয়ে কথা বলুন। ঘরে কী কী জিনিস আছে, কীভাবে ঘর পরিষ্কার করতে হয় সব বিষয়েও কথা বলুন।
এছাড়াও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।
সূত্র : কিডস হেলথ