এডিস মশামুক্ত বাড়ি যেভাবে রাখবেন

0
684

করোনা মহামারির মধ্যে নীরবে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু। অনেকেই এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ জন্য বাসা এডিস মশামুক্ত রাখা জরুরি। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. শামীমা ইয়াসমীন। লিখেছেন আতিফ আতাউর।

এমনিতেই করোনার কারণে মানুষ অসহায়। তার ওপর মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো চেপে বসেছে আরেক উপদ্রব—এডিস মশা। করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের মধ্যেই মারাত্মক রূপ নিয়েছে ডেঙ্গু। এমন অনেক করোনা রোগী পাওয়া যাচ্ছে যারা একই সঙ্গে করোনা ও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত।

বাংলাদেশে সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুর মৌসুম। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, প্রতিদিন গড়ে প্রায় দুই শর মতো মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। গত বছর যেখানে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল এক হাজার ৪০৫ জন, সেখানে এ বছর জুলাই মাসেই রোগীর সংখ্যা দুই হাজার ২৮৬ জন। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে কভিড হাসপাতালের মতো ডেঙ্গু রোগীর চিকিত্সার জন্যই ঢাকায় চারটি বিশেষ হাসপাতাল নির্ধারণ করা হয়েছে। এমন অবস্থায় ডেঙ্গু প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। দুই সিটি কর্পোরেশনেরও মনোযোগ আপাতত সেদিকেই।

এডিস মশা যেখানে জন্মে

এডিস মশা ফুলের টব, ভাঙা হাঁড়িপাতিল, কলস, গাড়ির পরিত্যক্ত টায়ার, কৌটা, নারকেল বা ডাবের খোসা ইত্যাদি স্থানে যেখানে স্বচ্ছ পানি থাকে সেখানে বংশ বিস্তার করে। বাসাবাড়ির রেফ্রিজারেটর এবং এসির জমা পানিতেও এডিস মশা বংশ বৃদ্ধি করে। এ জন্য পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা এবং পানি তিন দিনের বেশি জমতে না দেওয়াই এডিস প্রতিরোধের মোক্ষম উপায়।

বাসা আশপাশ এডিসমুক্ত রাখতে

* প্রতি তিন দিনে এক দিন বাসায় যেকোনো স্থানে জমে থাকা পানি ফেলে দিন।

* ফুলের টব, ভাঙা হাঁড়িপাতিল, কলস, গাড়ির পরিত্যক্ত টায়ার, কৌটা, প্লাস্টিকের ড্রাম, মাটির পাত্র, বালতি, ব্যাটারি শেল, নারকেল ও ডাবের খোসা, বোতল, রেফ্রিজারেটরে এবং এসির তলায় যাতে পানি না জমতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখুন।

*ব্যবহূত পাত্রের গায়ে লেগে থাকা মশার ডিম অপসারণে পাত্রটি ভালো করে ঘষে পরিষ্কার করুন।

* অব্যবহূত পাত্র উল্টে রাখুন।

* সম্ভাব্য যেসব স্থানে মশা জন্মায় সেসব স্থান পরিষ্কার রাখুন।

কোথাও যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন।

* বাড়ির ভেতর, আশপাশ ও আঙিনা পরিষ্কার রাখুন।

* দিনে বা রাতে যখনই ঘুমান মশারি ব্যবহার করুন।

* মশার কাপড় এড়াতে গা ঢাকা হালকা রঙের পোশাক পরুন।

* ডেঙ্গু আক্রান্ত এলাকায় জ্বরের রোগীকে অবশ্যই সব সময় মশারির মধ্যে রাখুন।

* বাড়ির ছাদ কিংবা উঠানে বৃষ্টির পানি জমে থাকলে দ্রুত সরিয়ে ফেলুন।

* ওভারহেড পানির ট্যাংক ও আন্ডারগ্রাউন্ড পানির রিজার্ভারের মুখ ঢেকে রাখুন।

* স্বাস্থ্যকর ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করুন।

* দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার পরিহার করুন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে