বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় ব্যক্তিগত পর্যায়ে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা, মাস্ক পরাসহ কোভিড প্রতিরোধের অন্যান্য করণীয়গুলো শিথিল করা যেতে পারে বলে মতামত দিয়েছে কোভিড বিষয়ক সরকারের জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। একইসঙ্গে বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আসা যাত্রীদের বিমানবন্দরে কোভিড-১৯ পরীক্ষা ও কোভিড ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট প্রদর্শনের বাধ্যবাধকতার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন তারা।
আজ রোববার সন্ধ্যায় জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার (৬ মে) জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির ৬৩তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আলোচনা শেষে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় কোভিডের সর্বশেষ পরিস্থিতি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাম্প্রতিক পরামর্শ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। কোনো কোনো দেশে এখনও কোভিড সংক্রমণ বেশি থাকলেও মৃত্যুহার, আইসিইউ প্রয়োজনীয়তা ও জটিলতা অনেক কম। আমাদের দেশে কোভিড সংক্রমণ বেশ কিছুদিন ধরে নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় পরামর্শক কমিটি সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক পরাসহ কোভিড প্রতিরোধের অন্যান্য করণীয়গুলো শিথিল করার বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করে।
তবে কমিটি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে যেমন- হাসপাতাল/চিকিৎসা কেন্দ্র এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদেরকে সতর্কতা হিসেবে মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ প্রদান করে। কমিটি মনে করে, কোভিড ছাড়াও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধে এটা সহায়ক হবে।
কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী জরুরি বিবেচনা না করলেও সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য বৈশ্বিক রিপোর্ট পর্যালোচনা ও দেশে সার্ভিলেন্স জোরদার করার জন্য সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর প্রতি পরামর্শ দেওয়া হয়। ভবিষ্যতে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার সব প্রস্তুতি রাখার সুপারিশ করা হয়।
হজ যাত্রীদের সৌদি আরবে প্রবেশের শর্ত মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়াও মার্স প্রতিরোধে উটের সংস্পর্শে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। অন্যান্য দেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সেই দেশের শর্তানুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের কোভিড পরীক্ষা ও কোভিড ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট প্রদর্শনের বাধ্যবাধকতার প্রয়োজন নেই বলে কমিটি মনে করে।
কোভিড ভ্যাকসিন বিষয়ে নিয়মিত বৈজ্ঞানিক তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ-সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুপারিশ করা হয় সভায়।
এর আগে গত শুক্রবার (৫ মে) করোনা মহামারি সংক্রান্ত বৈশ্বিক জরুরি অবস্থার অবসান ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের অন্যতম অঙ্গসংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস নিজে এই ঘোষণা দিয়েছেন। আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বড় আশা নিয়ে আজ আমি করোনা মহামারি সংক্রান্ত বৈশ্বিক স্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থার অবসান ঘোষণা করছি। প্রত্যাশা করছি, আমাদের সামনের দিনগুলো সুন্দর ও নিরাপদ হবে।