আসলে জন্মনিয়ন্ত্রণে বড়ি বা পিল এটার নিয়ম বা বিধি নিয়ে জানার আগে, আমাদের জানতে হবে, পিল কারা খেতে পারবে? আমাদের পিল গ্রহীতাদের আগে সিলেকশন করতে হবে। প্রত্যেকটা রোগীরই একটু হিস্ট্রি নেওয়া, যে তার বড় ধরনের কোনো সমস্যা আছে কি-না?
তার সিস্টেমিক ডিজিজ যেমন- প্রেসার, হাইপার টেনশন বা ডায়াবেটিস, থাইরয়েড ডিজঅর্ডার, কারো কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ থাকে, সেগুলো আছে কিনা জেনে নিতে হবে। আবার অনেক মহিলাদের অনিয়মিত ঋতুস্রাব চলতে থাকে। সেসব ক্ষেত্রেও আমাদের কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিতে হয়।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়েছেন বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের অবস অ্যান্ড গাইনি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. নফিছা খাতুন (নফছি)।
তিনি বলেন, গ্রহীতার রক্তশূন্যতা আছে কি-না এসবও দেখে নিতে হবে। সেই ক্ষেত্রে আমরা কিছু কিছু ডিটেইলস করে নিতে পারি- তার হিমোগ্লোবিন টেস্ট তথা এনিমিয়া আছে কিনা দেখে নেওয়া, আল্টাসনোগ্রাফি দেখতে হবে। তার প্রেগন্যান্সি আছে কিনা বা সার্ভিক্সে লোকালি কোনো এলিশন আছে কিনা- সেটাও দেখে নিতে হবে। সার্ভাইক্যাল পলিপ বা জরায়ুতে কোনো টিউমার আছে কিনা।
এসব থাকলে তো সাধারণত আমাদের এগুলো দেওয়া যায় না। সিস্টেমিক কিছু ইনভেস্টিগেশন করেও আমরা এটা কনফার্ম করে নিবো যে এসব গ্রহীতাকে আমরা দিতে পারি।
আরও আছে, নিয়ম মানতে হবে। যারা নতুন পিল ব্যবহার করবে তাদেরকে যেভাবে পিল দেব, যেমন হচ্ছে- কিছু পিলে ২১টা ট্যাবলেট থাকে, কিছুতে ২৮টা থাকে। তখন এদেরকে আমাদেরকে একটু নিয়ম বলে দিতে হয়।
আবার হচ্ছে, কারও কারও ক্ষেত্রে ডেলিভারির পরপরই পিল শুরু করতে পারে। যেমন- অনলিপ্রোজেস্টেরন পিল। যেমন- ডেলিভারি মাতৃদুগ্ধ পান করান মানে ‘এক্সক্লুসিভ ব্রেস্টফিডিং’ করান তাদের ক্ষেত্রে।
অনেকগুলো মেথড আছে। এর মধ্যে একটা পিলও একটা অনলিপ্রোজেস্টেরন পিল। এটা তিন সপ্তাহ থেকে ৪০ দিন পর শুরু করতে বলি। আবার যারা ব্রেস্টফিড করাচ্ছে না, তাদের ডেলিভারির তিন সপ্তাহ পর থেকে যেন পিল শুরু করতে পারে।
অনেক সময় গর্ভপাতের পরেও যখন এবরশন হয়ে গেছে, সেই দিন থেকে তাদেরকে আমরা পিল ব্যবহার করতে বলি। আবার পোস্ট-এবরশনের ক্ষেত্রেও আমরা এভাবে বলতে পারি। তবে যদি কোনো কম্প্লিকেশন না থাকে তাহলে সাধারণত আমরা বলি, ম্যানস্ট্রুশনের প্রথম দিন থেকে পিল খাওয়া শুরু করতে।
যখন ২১টা পাতার পিল থাকবে, তাদেরকে বলতে হবে প্রথম দিন থেকে শুরু করবে এবং পাতাটা শেষ হয়ে গেলে সাত দিন বিরতি দিতে পারে। অষ্টম দিন থেকে আবার নতুন করে পিল শুরু করবে। এভাবে আসলে পিল খাওয়ার নিয়মটা বলে দিলে সুবিধা হবে। এই নিয়মে খেলে মনে হয় যে, কোনো আনওয়ান্টেড প্রেগন্যান্সি হওয়ার চান্স কম থাকবে।