টিকা নিতে ১০ লাখ নিবন্ধন

0
775
Spread the love

ভিড় বাড়ছে কেন্দ্রে, এক দিনে লাখ ৩৯ হাজার ৫২২ নিবন্ধন

টিকা নিতে দীর্ঘ হচ্ছে আগ্রহীদের তালিকা। বয়সসীমা কমিয়ে আনার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে নিবন্ধন ও টিকাগ্রহীতার সংখ্যা। গতকাল পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন প্রায় ১০ লাখ মানুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় নিবন্ধন করেছেন ২ লাখ ৩৯ হাজার ৫২২ জন। তবে তাৎক্ষণিক নিবন্ধন করতে গিয়ে ভিড় বাড়ছে টিকা কেন্দ্রগুলোতে।

গতকাল রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে টিকা নিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট হাসপাতালে টিকা নিয়েছেন বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গতকাল সারা দেশে টিকা নিয়েছেন ১ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫১ জন। এর মধ্যে পুরুষ টিকাগ্রহীতার সংখ্যা ১ লাখ ১১ হাজার ৬৯১ জন, নারী ৪৬ হাজার ৭৬০ জন। রাজধানীতে টিকা নিয়েছেন ১৯ হাজার ১১৫ জন। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে টিকা নিয়েছেন ৯৬৪ জন, সচিবালয় ক্লিনিকে ৩০৯ জন, সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে ৭০০ জন, মোহাম্মদপুর ফারটিলিটি সেন্টারে ৩৭০ জন, মাতুয়াইল মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ৪৮২ জন, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ৯৯০ জন, কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালে ৫৫২ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৮৬০ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা নিয়েছেন ৯৩০ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ হাজার ৩০ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৯০৬ জন, শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ৪২৬ জন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ১ হাজার ৮৩৭ জন। হাসপাতালগুলোতে তাৎক্ষণিক নিবন্ধন করে টিকাগ্রহীতার সংখ্যা বাড়ছে। দুই দিন ধরে তাৎক্ষণিক নিবন্ধনের কারণে রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে দৈনিক সক্ষমতার তুলনায় বেশি মানুষকে টিকা দিতে হচ্ছে। এতে টিকা প্রদানের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার কারণে আগে নিবন্ধন করার তাগিদ দিয়েছেন তারা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি বুথে দিনে ১ হাজার ২০০ মানুষের টিকা দেওয়ার কথা। কিন্তু গতকাল সেখানে ১ হাজার ৮৩৪ জন মানুষ টিকা নিয়েছেন। এর আগের দিন সেখানে টিকা নিয়েছেন ১ হাজার ৪৯৭ জন। বিএসএমএমইউ-এর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জুলফিকার আহমেদ আমিন বলেন, নিবন্ধন এখন আমাদের সক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এটি একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এতে সিস্টেম ব্যাহত হয়। সিস্টেমবিহীন হয়তো ১০০ মানুষকে টিকা দেওয়া যায়, হাজার হাজার মানুষকে দেওয়া সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, ‘বুধবার আমাদের হাসপাতালে নির্ধারিত তালিকার বাইরে ৪০০-এর বেশি মানুষ টিকা নিয়েছেন। আমি জানি না বৃহস্পতিবার কতজন আসবে, কত টিকা আনব। এভাবে সুন্দর ব্যবস্থাপনাটাই নষ্ট হয়ে যাবে।’

গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, কেউ রেজিস্ট্রেশন করতে ব্যর্থ হলে তিনি যদি জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে টিকাদান কেন্দ্রে যান, সেখানে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা দিতে পারবেন। সেই ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে চেক করা হবে, তিনি কেন রেজিস্ট্রেশন করেননি। এ নির্দেশনার পর থেকে হাসপাতালগুলোতে তাৎক্ষণিক নিবন্ধন করে টিকা নেওয়ার হার বাড়ছে। মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সেন্টারের পরিচালক ডা. মনিরুজ্জামান সিদ্দিকি বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে এলেই টিকা দেওয়ার এই নির্দেশনার পর গত মঙ্গলবার থেকে আমাদের এখানে চাপ অনেক বেড়েছে। এখন তাৎক্ষণিক নিবন্ধন করে অনেকেই টিকা দিতে চাচ্ছে। তবে সেটি আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, যাবতীয় আয়োজন আমরা করেছি, জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে এলে আমরা নিবন্ধন করে দিচ্ছি। কিন্তু তারপরও অনুরোধ থাকবে যাদের সুযোগ আছে, শিক্ষিত জনগোষ্ঠী ৩-৪ মিনিট সময় ব্যয় করে নির্ধারিত তারিখে টিকা নিতে আসুন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ও মুখপাত্র রোবেদ আমিন বলেন, সেন্টারগুলোতে নিবন্ধন করে দেওয়ার মানুষ রয়েছে। তবে তাৎক্ষণিক নিবন্ধন সংখ্যা বাড়লে সেগুলো সামলানো কঠিন হয়ে যাবে হাসপাতালগুলোর জন্য। একান্তই অসুবিধা না হলে রেজিস্ট্রেশন করে কার্ড নিয়ে টিকা নিতে সেন্টারে গেলে সবচেয়ে ভালো হয়। আমাদের আহ্বান থাকবে একটু কষ্ট করে সবাই আগে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা নিতে যান। এতে হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষে সবার তথ্য সুন্দর করে সংরক্ষণ করা সহজ হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে