মহামারীকালে মানসিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে

0
780
Spread the love
শারীরিক সুরক্ষার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখাটাও জরুরি।

করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ে সংক্রমণ থেকে বাঁচা, ঘরে বন্দি অবস্থায় শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখা, সামাজিক দূরত্ব ইত্যাদি নিয়ে চলে আসতো বিষদ আলোচনা।

তবে এই পুরো সময়টা জুড়ে সামাজিক দূরত্বে থাকা মানুষগুলো মানসিকভাবে হয়েছেন বিপর্যস্ত প্রতিদিন। আর চারিদিকের মৃত্যুর মিছিলের সংবাদের মাঝে মন খারাপের বিষয়টা অবহেলাতেই রয়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘পালমোনারি মেডিসিন’ বিশেষজ্ঞ এবং ‘আইসিইউ’র চিকিৎসক মাইক হ্যানসেন স্বাস্থ্যবিষয়ক এক ওয়েবসাইটের সঙ্গে কথা বলেন সেই মানসিক অবস্থায় অবনতি নিয়ে, জানিয়েছেন তা থেকে উত্তরনের উপায় সম্পর্কে।

ওয়েবসাইটটির প্রতিবেদনের আলোকে জানানো হল বিস্তারিত।

ব্যায়াম: হ্যানসেন বলেন, “মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ব্যায়ামের উপকারী প্রভাবের সপক্ষে বর্তমানে আরও শক্তিশালী প্রমাণ পাওয়া গেছে। ‘রেজিস্ট্যান্স ট্রেইনিং’ আর ‘কার্ডিও’ দুটোই হতাশাগ্রস্ততা কমায়। এজন্য যে আপনাকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে তা কিন্তু নয়। মৃদু মন্দ ব্যায়ামই যথেষ্ট। তবে তা হতে হবে নিয়মিত। বরং ভারি ব্যায়ামই আপনার অবসাদ বাড়াবে।”

খাদ্যাভ্যাস: মাছ, ফল, সবজি, বাদাম ইত্যাদি স্বাস্থ্যকর মিশ্রণ যদি আপনার খাদ্যাভ্যাসে থাকে তবে শারীরিক ও মানসিক দুই দিক থেকেই আপনি ক্রমে হয়ে উঠবেন শক্তিশালী। আর খাদ্যাভ্যাসে প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি থাকলে শারীরিক অসুস্থতার ঝুঁকির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানসিক অসুস্থতার ঝুঁকিও বাড়তে থাকে।

ঘুম: মহামারীর কারণে দৈনন্দিন জীবনের রুটিনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ঘুমের রুটিনও হয়েছে বিশৃঙ্খল। যাদের অনিদ্রাজনীত সমস্যা ছিল তাদের সমস্যার তীব্রতা বেড়েছে। অপরদিকে ঘরে বসে অফিস, আর অবসর সময় কাটানোর জন্য মোবাইল, টিভি, কম্পিউটার ছাড়া তেমন কোনো উপায় না থাকায় বেড়েছে ‘স্ক্রিন টাইম’। এতে চোখের ক্ষতি তো হয়েছেই, ঘুমেরও সমস্যা তৈরি হয়েছে মারাত্মক হারে। ঘুম স্বাভাবিক করতে ধ্যান, ‘ব্রিদিং এক্সারসাইজ’, যোগ ব্যায়াম ইত্যাদিতে মনযোগ দিতে হবে।

ঘরের বাইরে যাওয়া: প্রকৃতির সংস্পর্শ শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে অনেক উপকারী বিষয়। প্রাকৃতিক পরিবেশে কাটানো সময়টুকু আপনার মানসিক চাপ কমায়, অস্বস্তি দূর করে, হতাশা তাড়ায়। আবার বৈদ্যুতিক যন্ত্রগুলো থেকে আপনাকে দূরে রাখছে। তবে আছে ভাইরাস সংক্রমণের ভয়। তাই উপায় হল সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যবিধি মেনে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় বাইরে থেকে হেঁটে আসা উচিত। ভীড় এড়িয়ে চলুন।

মানুষের সংস্পর্শ: লকডাউনের সময় পরিচিত মানুষগুলোর সঙ্গে মুখোমুখি দেখা হয়নি অনেকদিন। লকডাউন শেষ হবার পরও আতঙ্কের কারণে আমরা অনেকেই দূরত্ব বজায় রাখছি।

হ্যানসেন বলেন, “ম্যাসেজের মাধ্যমে কথোপকথন নিসঙ্গতা বাড়ায়। তাই যখনই কারও সঙ্গে যোগাযোগ করবেন, ফোন করে কথা বলুন। ভিডিও কল করা সম্ভব হলে আরও ভালো।”

ইতিবাচক মানসিকতা: পুরো একটা বছর ঘরবন্দি থাকার পর এখন পরিস্থিতিতে পরিবর্তন এসেছে। পৃথিবী বিভিন্ন দেশে মানুষ এখন করোনাভাইরাসের টিকা নিচ্ছে, আমাদের দেশেও টিকা এসেছে। হয়ত ভাইরাসের তাণ্ডব এখনই ফুরিয়ে যাবে না, তবে আশার আলো দেখা দিতে শুরু করেছে। কমে আসছে সংক্রমণ আর মৃত্যুর সংখ্যাগুলো। তাই নিরাশ না হয়ে স্বাভাবিক জীবন ফিরে আসা যাবে কদিন পরেই, এমন মানসিকতা গড়ে তোলা উচিত সবারই ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে