যে কারণে খাদ্যতালিকায় চিনাবাদাম রাখা জরুরি

0
89
Spread the love

চিনাবাদাম আমাদের দেখে খুব পরিচিত একটি খাবার। গল্প, আড্ডা, সিনেমা দেখা থেকে শুরু করে এমন অনেক জায়গা আছে, যেখানে চিনাবাদাম না হলে জমেই না। চিনাবাদাম স্বাদেও ভাল। এতে রয়েছে, অজস্র গুণ। চিনাবাদাম যেমন পেট অনেক ক্ষণ ভরা রাখে, তেমনই শরীরে অল্প যেটুকু ফ্যাট প্রয়োজন হয়, তার অনেকটাই পূরণ হয়। আজকে জানবো চিনাবাদামের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে।

চিনাবাদামের পুষ্টি

প্রোটিন: চিনাবাদামে স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে। যা পুষ্টিগতভাবে মানুষের বৃদ্ধির জন্য মাংস এবং ডিমের সমতুল্য। যেহেতু চিনাবাদামের প্রোটিনগুলো উদ্ভিদ-ভিত্তিক, তাই তারা প্রাণীর প্রোটিনের বিপরীতে ফাইবার এবং অনন্য বায়ো-অ্যাকটিভ উপাদানগুলোর মতো অতিরিক্ত উপাদান বহন করে।

ফাইবার: চিনাবাদাম ফাইবারের একটি ভাল উত্স এবং রক্তে শর্করাকে স্থিতিশীল রাখে যাতে এটি খুব দ্রুত বৃদ্ধি না পায়।

ভিটামিন: চিনাবাদাম নিয়াসিন, ফোলেট, থায়ামিন, রাইবোফ্লাভিন, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড, পাইরিডক্সিন এবং ভিটামিন ই এর একটি ভাল উত্স।
খনিজ: চিনাবাদামের পুষ্টিতে তামা, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজ রয়েছে, যা শরীরের স্বাস্থ্য এবং সঠিক ক্রিয়াকলাপের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

চিনাবাদামের স্বাস্থ্য উপকারিতা
হার্টের জন্য ভাল: কম চর্বিযুক্ত ডায়েটের তুলনায় চিনাবাদাম এবং এর পণ্যগুলো হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী। চিনাবাদামের মনস্যাচুরেটেড ফ্যাট কারণে ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করতে পারে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: চিনাবাদাম এবং অন্যান্য বাদাম ডায়াবেটিস সুপারফুডের মর্যাদা অর্জন করেছে। চিনাবাদামে ফাইবার, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন এ এবং ই থাকে। চিনাবাদামের গ্লাইসেমিক সূচক কম থাকে, যার অর্থ তারা রক্তে শর্করাকে স্পাইকিং থেকে বাধা দেয়।

কোলেস্টেরল কমায়: কোলেস্টরেলের সমস্যা খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। হৃদ্রোগসহ নানা শারীরিক সমস্যার মূলে রয়েছে এই বাড়তি কোলেস্টেরল। চিনাবাদাম দেহের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে বিশেষভাবে কার্যকরী। বাদামের ভালো ফ্যাট কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড কমিয়ে ফেলে কোনো ধরনের ওজন বাড়ানো ছাড়াই।

রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে: চিনাবাদাম রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সকালের নাশতায় চিনাবাদাম বা চিনাবাদামের মাখন খেলে প্রায় পুরো দিনই রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

ওজন কমায়: ওজন কমানোর জন্য কিছুটা ভালো চর্বির প্রয়োজন রয়েছে। আর চিনাবাদামে রয়েছে ভালো ফ্যাটি অ্যাসিড। এ ছাড়া ডায়াবেটিসের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রতিদিন অল্প হলেও চিনাবাদাম খাওয়া উচিত ।

স্মৃতিশক্তি বাড়ায়: বয়স হতে না হতেই স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া শুরু করে অনেকেরই। এর কারণ হচ্ছে মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারায়। মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজন হয় সঠিক খাদ্যের। চিনাবাদামকে বলা হয় মস্তিষ্কের খাবার।

রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়: খুব হুটহাট নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ার সমস্যাকে মূলত রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়ার মূল লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়। চিনাবাদাম এই রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকেই উন্নত করতে কাজ করে। চিনাবাদামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা উন্নত করে।

নাট বাটার বা বাদামের মাখন না খেয়ে সরাসরি চিনাবাদাম খাওয়াটাই উপকারী। যে নারী-পুরুষেরা প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ১০ গ্রাম চিনাবাদাম বা কোনো বাদাম খান তাদের ক্যানসার ও হৃদ্রোগসহ নানা রকম মরণব্যাধি থেকে অকালমৃত্যুর ঝুঁকি বাকিদের তুলনায় কম।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে