কোনো লক্ষণ ছাড়াই আপনার ক্যানসারের ঝুঁকিতে পড়ছেন আপনি। বয়সের সঙ্গে শরীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্ষতিকারক কোষগুলোও। আর ভুল লাইফস্টাইলের কারণেই নষ্ট হচ্ছে কিডনি; যা একটা সময় রূপ নিচ্ছে ক্যানসারের।
এক জরিপে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে প্রায় ৪৬০০ জনের কিডনি ক্যানসার ধরা পড়েছে; যাদের গড় বয়স ৬৫ বছর।
ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যারা ধূমপান করেন না তাদের তুলনায় ধূমপায়ীদের কিডনি ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি প্রায় দ্বিগুন। এমনকি যদি আপনি ধূমপান বা মদ্যপান না করেন এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং নিষ্ক্রিয় থাকার মতো সমস্যাযুক্ত জীবনযাত্রার অভ্যাস থাকে, তবে আপনি বৃদ্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিডনি ক্যানসারের একটি বড় ঝুঁকিতে রয়েছেন।
কিডনি ক্যানসারের সবচেয়ে সাধারণ ধরন হলো- রেনাল সেল কার্সিনোমা (RCC); যা সমস্ত ক্ষেত্রে প্রায় ৯০ শতাংশ হয়ে থাকে।
কিডনিকে ক্যানসার থেকে রক্ষায় যে ভুলগুলো এড়াতে হবে
সুষম খাদ্য: ফল, শাকসবজি এবং গোটা শস্যসমৃদ্ধ খাবারকে অগ্রাধিকার দিন। প্রক্রিয়াজাত মাংস, চিনিযুক্ত পানীয় এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বি সীমিত করুন। এই পুষ্টি-ঘন খাবারগুলো প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে যা কিডনির সর্বোচ্চ কার্যকারিতা সহায়ক হয় এবং কিডনি ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
অতিরিক্ত ওজন: নিয়মিত ব্যায়াম এবং মননশীল খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর শরীরের ওজন বজায় রাখার চেষ্টা করা। অতিরিক্ত ওজন কিডনিতে চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং কিডনি রোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। বিভিন্ন পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার দিকে মনোনিবেশ করুন।
পানি পান: কিডনির সঠিক কার্যকারিতা এবং শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ এবং টক্সিন দূর করার জন্য পর্যাপ্ত হাইড্রেশন অপরিহার্য। কিডনি ঠিক রাখতে কমপক্ষে ৮ গ্লাস বা ২ লিটার পানি সারা দিনে পান করুন।
ধূমপান ও অ্যালকোহল: ধূমপান এবং অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন কিডনি ক্যানসারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকির কারণ। ধূমপান ত্যাগ করা এবং মদ্যপান পরিমিত করা আপনার কিডনিকে রক্ষা করতে এবং ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: উচ্চ রক্তচাপ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কিডনির ক্ষতি করতে পারে, কিডনি রোগ এবং ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। নিয়মিত আপনার রক্তচাপ পরীক্ষা করুন এবং একটি সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম, স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট এবং প্রয়োজনে ওষুধ সেবন করুন।
উচ্চ রক্তে শর্করার মাত্রা: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কিডনি রোগ এবং ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি থাকে। ডায়েট, ব্যায়াম, ওষুধ এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে রক্তে শর্করার মাত্রা কঠোর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখুন। নিয়মিত শরীর চর্চা এবং কিডনি জটিলতার ঝুঁকি কমাতে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
অত্যধিক ব্যথানাশক ওষুধ গ্রহণ: পেইন কিলার বা অতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন। এর অতিরিক্ত ব্যবহার কিডনির ক্ষতির কারণ হতে পারে। শারীরিক থেরাপি, হিট থেরাপি, বা আকুপাংচারের মতো বিকল্প ব্যথা দূর করার কৌশলগুলো ব্যবহার করুন।