অনেকে মনে করেন, চুল ভালো থাকবে কি না তা নির্ভর করে চুলের যত্ন নেওয়ার ওপর। এটি কিছুটা ঠিক। তবে এটিও সত্যি যে শুধু বাইরে থেকে পরিচর্যা করাই যথেষ্ট নয়, সেইসঙ্গে পরিবর্তন আনতে হবে জীবনযাপনের ধরনেও। কারণ চুলের স্বাস্থ্য আমাদের জীবনযাপন, খাবার খাওয়ার অভ্যাস ইত্যাদির ওপরও নির্ভর করে।
আরও আগে পুরুষের মাথায় টাক পড়তো কেবল বয়স বাড়লেই। কিন্তু এখন আর বয়স দরকার হয় না, অনেক কম বয়সী পুরুষের মাথায়ও দেখা যায় বিশাল টাক। কারও কারও তো বয়স ত্রিশের কোঠা পার হওয়ার আগেই মাথার সব চুল খালি হয়ে যায়। এর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হতে পারে জীবনযাপনের ধরন।
চিনি খেলে তা টাক পড়ার জন্য দায়ী হতে পারে। এর অন্যতম কারণ হলো অতিরিক্ত চিনি রক্ত চলাচলে বাধা তৈরি করতে পারে। স্ক্যাল্পে রক্ত চলাচল কমে গেলে তা শুষ্ক হয়ে চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে যায়। সেইসঙ্গে ধমনির দেয়ালের পুরুত্ব বেড়ে যাওয়ার ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। শুধু চুল পড়া নয়, অতিরিক্ত চিনি খেলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যায়।
ভিটামিনের অভাবেও বাড়তে পারে টাক পড়ার সমস্যা। নিয়মিত প্রোটিন পাউডার খাওয়ার অভ্যাস আছে অনেকের। এটিও কিন্তু হতে পারে চুল পড়ার জন্য দায়ী। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে বাড়তে পারে থাইরয়েড। সেখান থেকেও দেখা দেয় চুল পড়ার সমস্যা।
চিনি খাওয়ার আরও কিছু ক্ষতিকর দিক
চিনি যদি অতিরিক্ত খান তবে তা লিভারের চারপাশে অতিরিক্ত চর্বির একটি স্তর তৈরি করে। যে কারণে লিভারের আকৃতির পরিবর্তনসহ এর কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় কিন্তু চিনিকে ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিদিন ১৫০ ক্যালোরি গ্রহণ করলে তা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় ১.১ শতাংশ।
অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ফলে দ্রুত মেদ বেড়ে যেতে পারে। এটি তলপেট, চিবুকসহ শরীরের অন্যান্য জায়গায় ফ্যাট জমায়। বাড়তি মেদ জমলে তা দূর করা সহজ নয়। তখন নানা ধরনের প্রচেষ্টা ও কসরত চালিয়ে যেতে হয়। প্রতিদিন অতিরিক্ত চিনি খাওয়া থেকে তাই বিরত থাকতে হবে।
চিনির আরেকটি ক্ষতিকর দিক হলো এটি আপনার বয়স খুব দ্রুত বাড়িয়ে দিতে পারে। অতিরিক্ত চিনি খেলে তা ত্বকে বলিরেখার কারণ হতে হবে। এ কারণে অনেককে বয়সের আগেই দেখতে বয়স্ক লাগে। তাই চেহারায় তারুণ্য ধরে রাখতে চাইলে কমাতে হবে চিনি খাওয়ার পরিমাণ। প্রতিদিন সর্বোচ্চ পাঁচ চা চামচ পর্যন্ত চিনি খাওয়া নিরাপদ।