অ্যালার্জি হলে শরীরের মাস্ট সেলগুলো থেকে বেশি পরিমাণে রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ হয় যা অ্যালার্জির মত উপসর্গ সৃষ্টি করে। মাস্ট সেল শরীরের রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাপনার অংশ। এ সেলগুলো সারা শরীরে পাওয়া যায়, বিশেষ করে- অস্থি মজ্জা, ত্বক, খাদ্য, শ্বাস ও রক্তনালিগুলোর চারপাশে। ওষুধ, খাদ্য, আবহাওয়ার পরিবর্তন (খুব শীত বা গরম), পরিবেশ দুষণ এবং পোকা-মাকড়ের কামড়সহ অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে এলে শরীরে চুলকানি, শ্লেষ্মা এবং প্রদাহসহ অ্যালার্জির লক্ষণ ও উপসর্গগুলো দেখা দেয়।
* উপসর্গ যা মৃদু থেকে প্রাণঘাতী পর্যন্ত হতে পারে
ত্বকে চুলকানি, হাইপারমিয়া, ছত্রাক সংক্রমণ, ঘাম, ফুসকুড়ি, চোখে চুলকানি, জ্বালা-পোড়া ভাব, লালচোখ, নাকে চুলকানি, হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া, নাকবন্ধ, মুখ ও গলায় চুলকানি, জিহ্বা বা ঠোঁট ফুলে যাওয়া, গলা ফুলে যাওয়া, কাঁশি, শ্বাস নিতে অসুবিধা, শ্বাসকষ্ট, নিম্ন রক্তচাপ, দ্রুত হার্টবিট, পেট ও অন্ত্রে ক্র্যাম্প, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা, গ্যাস, মাথাব্যথা, বিভ্রান্তি, ক্লান্তি, গুরুতর ক্ষেত্রে অ্যানাফিল্যাকটিক শক হতে পারে। এ অবস্থায় জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন।
* উপসর্গ নিয়ন্ত্রণের চিকিৎসা
অ্যান্টিহিস্টামিন, হিস্টাসিন, বেনাড্রিল, সেট্রিজিন, লোরাটিডিন টাইপ-১ হিস্টামিন রিসেপ্টর ব্লকার এবং টাইপ-২ হিস্টামিন রিসেপ্টর ব্লকার হচ্ছে রেনিটিডিন এবং ফ্যামোটিডিন, মন্টিলুকাস্ট ও জাফিরলুকাস্ট, অ্যাসপিরিন, কর্টিকোস্টেরয়েড ও মালিজুমাব। অ্যানাফিল্যাকটিক শক হলে অ্যাড্রেনালিন ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়।
* হিস্টামিন বেশি থাকা খাবারের তালিকা
অ্যালকোহল, বিয়ার, হার্ড পনির, সামুদ্রিকমাছ, চিংড়িমাছ, ঝিনুক, শাক, সসেজ, বেগুন, ইলিশ মাছ, গরুর মাংস ইত্যাদি।
* হিস্টামিন কম থাকা খাবারের তালিকা
দুগ্ধ (সোয়া ও কোকোনাট মিল্ক), গম, রাইস, ডাল, আপেল, পীচসহ কিছু ফল, অ্যাসপারাগাস এবং ব্রকলিসহ কিছু সবজি এবং অন্যান্য খাদ্য। যাদের আবহাওয়ার পরিবর্তন বা পরিবেশ দুষণে অ্যালার্জি হয়, তাদেরকে আবহাওয়ার পরিবর্তন ও পরিবেশ দুষণের বিষয়টা লক্ষ রেখে চলতে হবে। প্রয়োজনে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে ও অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ খেতে হবে।
লেখক : ডা. জাহিদ দেওয়ান শামীম
সিনিয়র সায়েন্টিস্ট, নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র