করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ৫২ দশমিক ৪০ শতাংশই ছিলেন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। অথচ করোনার উৎস শহর চীনের উহানে এ সংখ্যা ছিল ২০ দশমিক ৮০ শতাংশ, আমেরিকার নিউইয়র্কে ৩৬ শতাংশ ও ইতালিতে ৪৬ শতাংশ। গত বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই মাসে জেনারেল হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে পরিচালিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে আসে।
ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস অস্ট্রেলিয়া, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, চমেক এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) একদল গবেষকের ‘ডায়াবেটিস অ্যান্ড মেটাবলিক সিনড্রোম : ক্লিনিক্যাল রিসার্চ অ্যান্ড রিভিউস’ শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।
গবেষণায় বলা যায়, আইসিইউতে ভর্তি হওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে মৃত্যুহার ৬০ দশমিক ২ শতাংশ। অন্যদিকে আইসিইউতে ভর্তি হওয়া ডায়াবেটিস নেই এমন রোগীদের মধ্যে মৃত্যুহার ৫২ দশমিক ৫ শতাংশ। ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে ৫৩ দশমিক ৪ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপের রোগী ছিলেন। তাছাড়া অন্যান্য সমস্যার মধ্যে অন্যতম ছিল হৃদরোগ আক্রান্ত রোগী ১৭ শতাংশ, শ্বাসকষ্টের রোগী ৭ দশমিক ৯ শতাংশ এবং কিডনির সমস্যা ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। অন্যদিকে আইসিইউতে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে শ্বাসকষ্টের ৮০ দশমিক ৬ শতাংশ, জ্বর ৫৪ দশমিক ৫ শতাংশ, কফ ৩২ দশমিক ৯ শতাংশ রোগী আইসিইউতে ভর্তি হয়েছেন। তাছাড়া অধিকাংশ ডায়াবেটিস রোগীর বয়স ৫১ বছরের ওপরে। পুরুষ ডায়াবেটিস রোগীরা তুলনামূলক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ছিলেন। আইসিইউতে ভর্তি হওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে ৮৪ দশমিক ১ শতাংশ ছিলেন পুরুষ। এসব রোগীদের ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত এবং ইনসুলিনের ওপর নির্ভরশীল। তাদের ক্ষেত্রে মৃত্যুহার তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল। জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মোহাম্মদ মইনুল আহসান বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে সব ডায়াবেটিস রোগীরা ৫০ বছরের ওপরে। একই সঙ্গে এসব রোগীরা উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, শ্বাসকষ্ট সমস্যায়ও ভোগেন। যাদের ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত, ইনসুলিন নিতে হয় তাদের ঝুঁকির মাত্রাটা বেশি। জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের চিকিৎসক ডা. এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদী বলেন, করোনায় আইসিইউতে ভর্তি হওয়া প্রতি দুজনের একজন ডায়াবেটিস রোগী। আন্তর্জাতিকভাবেও ডায়াবেটিস করোনার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত।