করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর ব্যক্তির শ্বাসকষ্ট, জ্বর, মাথা ব্যথা, হাঁচি, কাশির মতো সমস্যা দেখা দেয় এ কথা সবারই জানা।আর যাদের অ্যাজমার সমস্যা আছে তাদের ক্ষেত্রে করোনা বাড়তি ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই করোনাকালে চিকিৎসকরা অ্যাজমা রোগীদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন। যেগুলো মেনে চললে ঝুঁকি অনেকটাই কমবে বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।
অ্যাজমা রোগীদের ঝুঁকি বেশি থাকে
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে কোষগুলো ফুলে ওঠে। ভাইরাস অণুগুলো ফেটে চারপাশের অন্যান্য কোষগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে সংক্রমণ। সংক্রমণ দ্রুত ব্রঙ্কিওল টিউবে ছড়িয়ে পড়ে। সংক্রমণ আরও বাড়লে ভাইরাসের অণুগুলি ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে ফুসফুসের মিউকাস মেমব্রেনে। ফুসফুসের দুই পাশের পেরিফেরিয়াল অংশ থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে শ্বাসানালীর উপরে ট্রাকিয়ার দিকে। সংক্রমণ ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়লে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। যদি কোনও রোগীর অ্যাজমার সমস্যা থাকে তবে তার করোনার গুরুতর লক্ষণগুলোর মুখোমুখি হতে পারে।
করোনা রোগীদের অ্যাজমার সমস্যা থাকলে
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, যাদের অ্যাজমার সমস্যা রয়েছে, তাদের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেশি। তাই যাদের অ্যাজমার সমস্যা বা শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা রয়েছে, করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে তারা কী করবে এই পরামর্শ দিয়েছে চিকিৎসকরা।
সতর্কতা অবলম্বন করে চললে আর সঠিক চিকিৎসায় এই রোগের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব
১) যাদের নিয়মিত ইনহেলার নিতে হয়, তারা অবশ্যই নিয়ম মেনে ইনহেলার ব্যবহার করুন। ইনহেলার অবশ্যই ভাল ভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে রাখাটাও জরুরি।
২) ধূমপান এই রোগের ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। তাই ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। সম্প্রতি ‘চাইনিজ সেন্টার্স অব ডিজিজ কন্ট্রোল’-এর পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে জানা গিয়েছে, করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন ধূমপায়ীরা।
অ্যাজমা রোগীদের জন্য সাবধানতা
১. যদি আপনি অ্যাজমা রোগী হন এবং সম্প্রতি করোনা সংক্রমিত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই টিকা নিন।
২. আপনি যদি ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নেওয়ার পর সংক্রামিত হন তবে দ্বিতীয় ডোজটি নেওয়ার জন্য কমপক্ষে এক মাস অপেক্ষা করুন।
৩. আপনার যদি অ্যাজমা ছাড়াও ক্যানসার, এইচআইভি থাকে তবে ভ্যাকসিন নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৪. খুব প্রয়োজন না হলে বাড়ি থেকে বের হবেন না। প্রয়োজন হলে দুইটা মাস্ক পরুন।
৫. অ্যাজমা রোগীদের ধূমপান এড়িয়ে চলা উচিত।
৬. অ্যাজমা রোগীরা ইনহেলার ও নির্ধারিত ওষুধ থাকলে সেগুলো সেবন করুন। সবসময় প্রয়োজনীয় ওষুধের স্টক রাখুন।
৭. পুষ্টি এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করার চেষ্টা করুন।
৮. বাইরের খাবার থেকে যত বেশি দূরে থাকবেন, তত ভালো।