করোনা ভ্যাকসিনের জন্য ১০০ কোটি সিরিঞ্জ মজুদের ঘোষণা ইউনিসেফের

0
945
coronavirus vaccine
Spread the love

আগামী বছরের শেষের আগে বিশ্বজুড়ে ১০০ কোটি সিরিঞ্জ মজুদের ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘ সংস্থা ইউনিসেফ। ভারতে নাকে স্প্রে করা ভ্যাকসিনের গবেষণা। জাপানের ভ্যাকসিন প্রকল্পে হ্যাকারদের হামলা ।

জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফ বলছে, চলতি বছরই ৫২ কোটি সিরিঞ্জ গুদামে মজুদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে তারা। ভ্যাকসিন আসার আগেই দেশগুলোতে প্রাথমিক সরবরাহ নিশ্চিত করতে এই লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, বিশ্বে ভ্যাকসিনের ডোজের মতোই সমসংখ্যক সিরিঞ্জের দরকার হবে। ব্যবহৃত সিরিঞ্জের জন্য ৫০ লাখ সুরক্ষা বক্সও কেনা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেন, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম হবে মানব ইতিহাসের বৃহৎ গণউদ্যোগগুলোর অন্যতম একটি। ভ্যাকসিনের দ্রুত উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের এই কার্যক্রম তাৎক্ষণিকভাবে এগিয়ে নিতে হবে। তিনি বলেন, চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই ৫০ কোটির বেশি সিরিঞ্জ পূর্বপ্রস্তুত করে রাখা হবে। যাতে সেগুলো দ্রুত এবং ব্যয় সাশ্রয়ী হিসেবে ব্যবহার করা যায়। কোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন উৎপাদন ও সমতার ভিত্তিতে বিতরণের লক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গঠিত আন্তর্জাতিক উদ্যোগ কোভ্যাক্সের মাধ্যমে জাতিসংঘের মজুদ সিরিঞ্জ ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন হেনরিয়েটা ফোর। ভ্যাকসিন জোট গ্যাভির নেতৃত্বে কোভ্যাক্সের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সিরিঞ্জের জন্য ইউনিসেফকে অর্থ পরিশোধ করবে গ্যাভি। প্রাণঘাতী সব রোগের বিরুদ্ধে বিশ্বের অর্ধেক শিশুকে টিকা দিতে সহায়তা করে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বভিত্তিক ভ্যাকসিন জোট গ্যাভি। ইউনিসেফ করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কার্যক্রমের জন্য যেসব সিরিঞ্জ মজুদ করছে, সেগুলো পাঁচ বছর পর্যন্ত নিরাপদ থাকবে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ। জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা ডব্লিউএইচও বলছে, বর্তমানে করোনাভাইরাসের ৪২টি ভ্যাকসিন মানবদেহে পরীক্ষাধীন। এর মধ্যে অন্তত ১০টি ভ্যাকসিন তৃতীয় এবং শেষ ধাপের গণপরীক্ষায় রয়েছে। এ ছাড়া আরও ১৫৬টি ভ্যাকসিন মানবদেহে পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরিতে প্রস্তুত হচ্ছে।

ভারতে নাকে স্প্রে করা ভ্যাকসিনের গবেষণা :  ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন জানিয়েছেন, একটি ইন্ট্রানেজাল (নাকে স্প্রে করার মাধ্যমে প্রয়োগ) সম্ভাব্য ভ্যাকসিন তৈরি করছে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই)। তিনি বলেন, কোডজেনিক্স সিডিএক্স ০০৫-এর  উৎপাদন শুরু করেছে সেরাম ইনস্টিটিউট, এটি কভিড-১৯ এর একটি ইন্ট্রানেজাল ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট। কোডজেনিক্স সিডিএক্স ০০৫-এর অগ্রগতির বিষয়েও জানান হর্ষবর্ধন। তিনি বলেন, পশুদের ওপর প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছে এবং ২০২০ সালের শেষের মধ্যে ব্রিটেনে কোডজেনিক্সের প্রথম পর্যায়ের মানবদেহে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পরে ভারতেও সেই ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেটের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালানোর পরিকল্পনা করছে সেরাম।

জাপানের ভ্যাকসিন প্রকল্পে হ্যাকারদের হামলা :  জাপানের স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, দেশটির ভ্যাকসিন উৎপাদনকারীরা এপ্রিল মাসের শুরু থেকে সাইবার হামলার শিকার হচ্ছে। কিয়েদো নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, তবে দৃশ্যত কোনো তথ্য এখনো ফাঁস হয়নি। মার্কিন তথ্য নিরাপত্তা সংস্থা ক্রাউডস্ট্রাইক জানিয়েছে, দেশটিতে এ ধরনের হামলা এবারই প্রথম ঘটল। এসব হামলা চীন থেকে করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। এমন পরিস্থিতিতে জাপান সরকারের ন্যাশনাল সেন্টার অব ইনসিডেন্ট রেডিনেস অ্যান্ড স্ট্র্যাটিজি ফর সাইবারসিকিউরিটি দেশটির টিকা উৎপাদনকারীদের গোপনীয় তথ্য চুরির এ ধরনের প্রচেষ্টার ব্যাপারে ‘সতর্কতার মাত্রা বাড়াতে’ বলেছে। ক্রাউডস্ট্রাইক জানিয়েছে, ভ্যাকসিন কোম্পানিগুলো ইলেকট্রনিক ফাইলগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করা ইমেইল পেয়েছিল। যা দেখে মনে হয়েছিল নতুন এই ভাইরাসের ব্যাপারে তথ্য রয়েছে কিন্তু সেগুলোতে কম্পিউটার ভাইরাস ছিল।

প্রতিষ্ঠানটির এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক স্কট জারকফ এসব সাইবার হামলাকে কভিড-১৯ এর চিকিৎসায় ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে প্রথম লড়াই হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে