কার্বোহাইড্রেট খাওয়া বন্ধ করে দিলে শরীরে কী প্রভাব পড়তে পারে

0
32
Spread the love

কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা হলো শরীরের প্রাথমিক জ্বালানি উৎস। এটি কোষ ও অঙ্গগুলোকে (মস্তিষ্কসহ) সঠিকভাবে কাজ করার জন্য শক্তি প্রদান করে। কিন্তু আপনি যদি একেবারে কার্বোহাইড্রেট খাওয়া বন্ধ করে দেন, তাহলে আপনার শরীরে কী প্রভাব পড়তে পারে? আর তা জানাতেই আজকের প্রতিবেদন। চলুন, জেনে নেওয়া যাক—

পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, ‘আমাদের শরীরে কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা ভেঙে গ্লুকোজে পরিণত হয়।

আর এই গ্লুকোজ কোষে ব্যবহৃত হয় ‘অ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেট’ তৈরির জন্য। এটি আমাদের বিপাক ক্রিয়াকে চালিত করে। যদিও এটি কার্বোহাইড্রেট ও চর্বি—উভয় উৎস থেকেই উৎপন্ন হতে পারে, তবে প্রাথমিক উৎস হিসেবে কার্বোহাইড্রেটকেই বেশি পছন্দ করে।’

পুষ্টিবিদরা আরো বলেন, ‘কার্বোহাইড্রেট পুরোপুরি এড়িয়ে চলা প্রযুক্তিগতভাবে সম্ভব নয়, কারণ প্রায় সব খাবারেই কিছু না কিছু ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট (প্রধান পুষ্টি উপাদান) থাকে। তবে আমাদের খাদ্যতালিকায় কার্বোহাইড্রেট কম থাকলে কিছু জিনিস ঘটতে শুরু করে।’

শরীরের প্রতিক্রিয়া

যেহেতু সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করতে ‘অ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেট’ প্রয়োজন, তাই শরীর সেটি তৈরি করার বিকল্প উপায় খুঁজে নেয়। যদিও চর্বি থেকে কিটোসিস প্রক্রিয়ায় ‘অ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেট’ তৈরি সম্ভব, তবুও মস্তিষ্ক গ্লুকোজকে প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে বেশি পছন্দ করে। শরীর যদি কার্বোহাইড্রেট থেকে প্রয়োজনীয় গ্লুকোজ না পায়, তাহলে পেশির প্রোটিন ভেঙেও ‘অ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেট’ তৈরি করতে পারে।

পুষ্টিবিদদের মতে, এর ফলে পেশি ক্ষয় হয়, যা কাম্য নয়। যদিও কিটোসিস কিছুটা পেশি ক্ষয় রোধে সহায়তা করে, তবুও গ্লুকোজ উৎপাদনের জন্য কিছু পরিমাণ পেশি ভাঙবেই।

খাবার থেকে কার্বোহাইড্রেট বাদ দিলে কী হয়

কার্বোহাইড্রেট সম্পূর্ণভাবে বাদ দিলে পর্যাপ্ত ফাইবার পাওয়া যায় না, যা পরিপাকতন্ত্র ও অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। খাদ্য আঁশ স্বাভাবিক মলত্যাগে সহায়তা করে এবং এটি মাইক্রোবায়োমের (অন্ত্রে বসবাসকারী উপকারী জীবাণু) জন্য খাদ্য হিসেবে কাজ করে, ফলে স্বাস্থ্য রক্ষায় এটি অপরিহার্য। এ ছাড়া ফাইবার হৃদরোগ, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ এবং বিপাকীয় স্বাস্থ্যের জন্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

কার্বোহাইড্রেট গুরুত্বপূর্ণ হলেও কী ধরনের কার্বোহাইড্রেট খাওয়া হচ্ছে সেটিও গুরুত্বপূর্ণ।

পুষ্টিবিদদের মতে, যতটা সম্ভব কম প্রক্রিয়াজাত ও প্রাকৃতিক কার্বোহাইড্রেট খাওয়াই উত্তম। অতি প্রক্রিয়াজাত, পুষ্টিগুণহীন কার্বোহাইড্রেট যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত। কার্বোহাইড্রেট বাদ দেওয়ার বদলে সুষম খাদ্য গ্রহণের দিকেই মনোযোগী হওয়া ভালো। যার মধ্যে থাকবে জটিল কার্বোহাইড্রেট, পর্যাপ্ত প্রোটিন ও চর্বি এবং প্রচুর ফলমূল ও শাক-সবজি।

কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে কম কার্বোহাইড্রেট বা কিটো ডায়েট উপকারী হতে পারে। যেমন- কিটো ডায়েট মৃগীরোগ (এপিলেপ্সি) নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্যও একটা পর্যায়ে রোগ নিয়ন্ত্রণে এটি সহায়ক হতে পারে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে