চট্টগ্রামে ডেঙ্গু প্রতিরোধ ব্যবস্থা অপ্রতুল

0
964
Spread the love

দেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রামে ডেঙ্গু প্রতিরোধ ব্যবস্থা অপ্রতুল। এ ছাড়া মশকনিধন কার্যক্রম উদ্বোধন করা হলেও তা নামমাত্র। এ কার্যক্রম তেমন দৃশ্যমান ও কার্যকর নয় বলেও অভিযোগ আছে। ফলে রাজধানী ঢাকার তুলনায় চট্টগ্রাম নগরের ডেঙ্গু প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা অপ্রতুল এবং দুর্বল বলে জানা যায়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নগরে ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশকনিধন কার্যক্রম পরিচালনা করে। সংস্থাটি ৪ নভেম্বর নগরে মশকনিধন কার্যক্রম শুরু করে। অভিযোগ আছে, চসিকের নগরে ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশকনিধন কার্যক্রম অনেকটা আনুষ্ঠানিকতানির্ভর এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম-উদ্যোগ প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না খাল, নালা-ড্রেন। ফলে এখানে জমে থাকে পানি, আবর্জনা। জন্ম নেয় এডিস মশা। চসিকের অতিরিক্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম বলেন, ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশকনিধন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। প্রতিটি ওয়ার্ডকে চার ভাগে ভাগ করে চারজন ¯েপ্রম্যান প্রতিদিনই ¯েপ্র করেন। বর্তমানে চসিকে ১৮০ জন ¯েপ্রম্যান, ২২০টি হ্যান্ড মেশিন ও প্রতিটি ওয়ার্ডে দুটি করে ফগার মেশিন আছে। এছাড়া মশকনিধনে ব্যবহৃত হয় কালো তেল, এডালটি সাইট ও লার্ভিসাইট ওষুধ। এসব মশকনিধনে খুব কার্যকর।

একই সঙ্গে পরিচ্ছন্ন বিভাগের মাধ্যমে ডোবা ও বাড়ির আশপাশও পরিষ্কারের কাজ চলে।’ চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম বলেন, ‘করোনা আতঙ্কের মধ্যে মানুষের মধ্যে ডেঙ্গুর শঙ্কা যোগ হয়েছে। ডেঙ্গু নিয়ে কয়েকজন হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ব্যাপারে সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্ক এবং বাড়ির আশপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।’ জানা যায়, করোনার মধ্যেই চলতি বছর চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দুইজন মারা যান। তাছাড়া করোনার মধ্যে ২৯ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত একাধিক রোগী ভর্তি হয়েছিলেন। গত তিন মাসে ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে চমেক হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে একাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। একই সঙ্গে ডেঙ্গু আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে আসা অনেক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। অন্যদিকে, জুন, জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাস ডেঙ্গুর মৌসুম। মৌসুম শেষ হলেও জলাবদ্ধতা নিরসনসহ নানা কারণে নগরীর প্রধান খাল-নালাগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা পানিতে বংশ বিস্তার করেছে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মশা নিয়ন্ত্রণে কেবল কীটনাশক নিয়ে চিন্তা করলে হবে না। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীর আবহাওয়া যেভাবে উষ্ণ হচ্ছে, বৃষ্টির মৌসুম যেভাবে পরিবর্তন হচ্ছে, তার সঙ্গে এডিস মশাসহ নানা কীটপতঙ্গ বেড়ে যাওয়ার একটি গভীর সম্পর্ক আছে। এসব পরিবর্তন সম্পর্কে দূরদর্শী হতে হবে। কারণ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে উষ্ণমন্ডলীয় এবং অবউষ্ণমন্ডলীয় পোকামাকড়ের প্রাদুর্ভাব ধীর ধীরে বাড়ছে। এছাড়া ইদানীং বৃষ্টিপাত অনেক আগেই শুরু হয়। বর্ষা যত দীর্ঘ হচ্ছে মশার প্রজননকালীন সময় দীর্ঘ হচ্ছে। তারা আরও বেশি প্রজনন সক্ষম হয়ে ওঠছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে