আমাদের জানামতে ডায়াবেটিস আছে দুই ধরনের—টাইপ ১ ও টাইপ ২। তবে এর বাইরেও এক ধরনের ডায়াবেটিস আছে, যাকে বলা হয় ল্যাটেন্ট অটোইমিউন ডায়াবেটিস অব অ্যাডাল্ট বা এলএডিএ। এটি হচ্ছে টাইপ ১ ও টাইপ ২-এর মাঝামাঝি এক ধরনের ডায়াবেটিস। অর্থাৎ একজন রোগীর মধ্যে টাইপ ১ ও টাইপ ২ উভয় ধরনের ডায়াবেটিসের লক্ষণ থাকে। এ জন্য একে ১.৫ ডায়াবেটিসও বলা হয়।
প্রাপ্ত বয়সে হয়
এটি সাধারণত ৩০ বছরের পর হয়। লক্ষণগুলো টাইপ ২ ডায়াবেটিসের মতো থাকে, তাই এটি টাইপ ২ ডায়াবেটিস হিসেবে ডায়াগনসিস হয় অনেক সময়।
লক্ষণ
► অতিরিক্ত পিপাসা লাগা
► মুখ শুকিয়ে যাওয়া
► দুর্বল লাগা
► ঘন ঘন ক্ষুধা লাগা
► হাত-পা ঝিমঝিম করা
যেখানে টাইপ ১ ডায়াবেটিস দ্রুত হয়ে যায়, সেখানে এলএডিএ বিস্তৃত হয় ধীরে ধীরে।
টাইপ ১ ডায়াবেটিস সাধারণত বাচ্চাদের হয়, যেখানে প্রথম থেকেই ইনসুলিন লাগে। সাধারণত টাইপ ২ ডায়াবেটিসের রোগীর অতিরিক্ত ওজন থাকে, কিন্তু এলএডিএর রোগী হালকা-পাতলা গড়নের হয়।
কারণ
এটাকে বলা হয় অটোইমিউন ডিজিজ, যেখানে শরীর প্যানক্রিয়াসের বেটা সেলকে শত্রু ভাবে এবং এর বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। বেটা সেলকে ধ্বংস করে, যার কারণে শরীরে ইনসুলিন তৈরি হতে পারে না।
কাদের বেশি হয়?
যাদের পরিবারে অটোইমিউন রোগের ইতিহাস আছে। এলএডিএর সঙ্গে অনেক সময় থাইরয়েডের সমস্যাও জড়িত থাকে।
সময়মতো শনাক্ত না হলে বাড়ে জটিলতা
এলএডিএ হলে শরীরে ইনসুলিনের ঘাটতি থাকে, তাই শরীর ফ্যাট ভেঙে কিটোন বডি তৈরি করতে থাকে, যা থেকে হতে পারে মারাত্মক জটিলতা ‘ডায়াবেটিক কিটো এসিডোসিস’। এ ছাড়া কিডনির রোগ, নার্ভের সমস্যা, ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি (হাত-পা জ্বালাপোড়া) হতে পারে।
চিকিৎসা
প্রাথমিক পর্যায়ে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে, শরীরচর্চা করে, শর্করাজাতীয় খাবার কম খেয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে না থাকলে মুখে খাওয়ার ওষুধ এমনকি এক পর্যায়ে ইনসুলিনও নিতে হতে পারে।
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. মো. মাজহারুল হক তানিম
ডায়াবেটিস, থাইরয়েড ও হরমোন রোগ বিশেষজ্ঞ
ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মালিবাগ, ঢাকা