লক্ষণ না থাকলেও কোভিড–১৯’য়ে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ রয়েছে অনেক।
কিছু মানুষ কোভিড-১৯’য়ে আক্রান্ত হওয়ার পরও কিছুই বুঝতে পারছেন না। অপরদিকে একই রোগে বিশ্বব্যাপি প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছেন অগনিত মানুষ।
মেডিকেল স্কুল অ্যাট ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি’র ‘মেডিসিন’ বিভাগের সহ-অধ্যাপক ন্যাটালিয়া ল্যামবার্ট বলছেন, “মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে হয়ত আপনিও আক্রান্ত হয়েছেন, কোনো উপসর্গ আপনার দেখা দেয়নি। তবে অভ্যন্তরিন ক্ষতি কিছু না কিছু হয়েছেই, যা হয়ত আপনাকে সারাজীবনে বয়ে বেড়াতে হবে। একে আমরা বলছি ‘লং কোভিড’।
কোন উপসর্গ এমন পরিস্থিতি জানান দেবে সে ব্যাপারেও জানান এই বিশেষজ্ঞ।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অবলম্বনে জানান হল ন্যাটালিয়া ল্যামবার্টের হুশিয়ারির বিস্তারিত।
বিরামহীন অবসাদ: ডা. ল্যামবার্ট জানান, তার কাছে আসা রোগীদের সিংহভাগই প্রচণ্ড অবসাদগ্রস্ত ছিলেন, কোনো কাজের শক্তিই যেন নেই তাদের। সেই তীব্র অবসাদ তাদের ভুগিয়েছে গড়ে প্রায় ৯৯ দিন। গত বছরের জুলাইতে নিজের জরিপ, ‘লং হউলার সার্ভে’ প্রকাশ করেন তিনি। এই জরিপে দীর্ঘদিন ধরে কোভিড-১৯’য়ে ভোগা রোগীদের উপসর্গ তাদের জীবন মরণ যুদ্ধের কথা জানিয়েছেন। আর অবসাদ ছিল সকল উপসর্গের মাঝে সবচাইতে সাধারণ ঘটনা।
মাথাব্যথা: কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে যে উপসর্গগুলো দেখা দেয়, তার মধ্যে মাথাব্যথা অন্যতম। আর তা ভোগায়ও সবচাইতে বেশি সময়। এই মাথাব্যথা বেশিরভাগ রোগীর ক্ষেত্রেই ছিল অবিরাম, কারও কারও সারাদিন মাথাব্যথা থাকতে দেখা গেছে। কিছু রোগীর মাথাব্যথা ছিল অনিয়মিত।
দম আটকে আসা: শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়ার ঘটনা কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে নতুন করে বলার প্রয়োজন রাখে না। ‘অ্যাসিম্পটোম্যাটিক’ বা লক্ষণ নেই এরকম রোগী থেকে শুরু করে রোগ থেকে সেরে ওঠা প্রায় সকলেই কমবেশি শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা ভুগেছেন।
ডা. ল্যামবার্টের জরিপ অনুযায়ী, কোভিডের দীর্ঘমেয়াদির প্রভাবের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা অন্যতম, সুস্থ হওয়ার পরও কয়েক মাস পর্যন্ত সমস্যা থেকে যায়। শ্বাসতন্ত্রকে সরাসরি আক্রমণকারী করোনাভাইরাসের ‘ট্রেডমার্ক’ যেন দম ফুরিয়ে আসা।
ঘোলাটে মস্তিষ্ক: কোভিডের আরেকটি মারাত্বক প্রভাব হল মাথায় ঘোলাটেভাব অনুভব করা। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের দাবি, সংক্রমণের শিকার হওয়া পর কয়েক মাস পর্যন্ত সিদ্ধান্তহীনতা, দ্বিধাগ্রস্ততা, চিন্তার খেই হারানো ইত্যাদি অনুভব করেছেন তারা। একারণে অনেকেই কোভিড থেকে মুক্তি পেলেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে কষ্ট হয়।
ড্রাই কফ: এটিও করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রাথমিক উপসর্গের একটি। আর তা দীর্ঘসময় আপনাকে ভোগাবেই।
এমন উপসর্গ যদি আপনার মাঝে দেখা দেয় তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে দ্রুত। স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। টিকা এসেছে শুনেই যদি মনে করেন মহামারী কেটে গেছে তবে মস্ত বড় ভুল হবে। এমনকি টিকা নেওয়ার পরও স্বাস্থ্যবিধি আমাদের সবাইকে মেনে চলতে হবে।