ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে বায়ু দূষণ ভয়াবহ। এটা নতুন কোনো খবর নয়। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি দূষণের নগরীর মধ্যে অন্যতম নয়া দিল্লি। পরিস্থিতি সেখানে অসহনীয় হয়ে উঠেছে। তাই দূষণ বিরোধী লকডাউন বা পল্যুশন লকডাউন দেয়ার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। শহরের ওপরে বিষাক্ত গ্যাসের এক ভয়ঙ্কর আস্তরণ। এতে নাগরিকদের শ্বাসপ্রশ্বাস নেয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ জন্য এক সপ্তাহের জন্য সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে রাজধানীতে।
শনিবার সাংবাদিকদের কাছে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, শিশু, ছেলেমেয়েরা দূষিত বাতাসে শ্বাস নিতে পারে না। তাই স্কুলগুলো বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি চার দিনের জন্য স্থগিত থাকবে সব নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ড। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
খবর অনুযায়ী, সরকারি কর্মকর্তাদেরকে বাসায় বসে কাজ করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বেসরকারি বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে যতটা সম্ভব বাসা থেকে কাজ করার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে দূর্ষিত নগরীর অন্যতম নয়া দিল্লি। এখানে বিষাক্ত পদার্থ ছড়িয়ে দেয়া কারখানা আছে। যানবাহন থেকে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে কার্বন ডাই অক্সাইডসহ বিষাক্ত পদার্থ। তাছাড়া কৃষি খাত থেকে যে ধোয়া উঠছে তাও আকাশে উঠে যাচ্ছে। এসব দূষণ এই নগরীর প্রায় ২ কোটি মানুষের মাথার ওপরের এক ধোয়ার মতো আস্তরণ সৃষ্টি করে প্রতি শীতে। এর আগে বাতাসের ধুলোবালি কমিয়ে আনতে আকাশে নিক্ষেপ করা হয়েছে জলকামান থেকে পানি। শনিবার শহরে বাতাসের গুণগত মান বজায় রাখার লড়াইয়ে রাজধানীতে লকডাউন দেয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা বলেছেন, এ ছাড়া আমরা আর কিভাবে বাঁচতে পারবো?
মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল বলেছেন, তিনি আদালতের এই সুপারিশ আমলে নেবেন। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা শেষে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। তিনি বলেন, এর আগে কখনো দূষণজনিত লকডাউন দেয়া হয়নি। এটা হবে এক কঠোর পদক্ষেপ। এর আগে শুক্রবারই কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দিয়েছে সেন্ট্রাল পল্যুশন কন্ট্রোল বোর্ড। তারা বলেছে, জরুরি ক্যাটেগরির অধীনে পদক্ষেপ বাস্তবায়নে প্রস্তুত থাকার জন্য। তারা বলেছে, বাতাসের এই খারাপ অবস্থা কমপক্ষে ১৮ই নভেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। কারণ, এ সময় পর্যন্ত বাতাসের তেমন কোনো গতি থাকবে না। চারদিকে থাকবে হিমেল আবহাওয়া। শনিবার বাতাসে উপস্থিত পিএম২.৫ পার্টিকেল সূচকে ছিল ৩০০-এর ওপরে। এই পার্টিকেল ভয়াবহভাবে ক্ষতিকর। এটা সরাসরি রক্তস্রোতে মিশে যেতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিদিনের জন্য পিএম২.৫ পার্টিকেলের সর্বোচ্চ যে সীমা বেঁধে দিয়েছে দিল্লির ওই মাত্রা তার ২০ গুন।
নয়া দিল্লি থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক পাভনি মিত্তাল বলছেন, শহরের মানুষ কমপক্ষে এক সপ্তাহ ধরে ঘুম থেকে জেগেই দেখছেন ঘনু কুয়াশা, মেঘ। এতে দৃষ্টিসীমা সীমিত হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। বছরের এই সময়টাতে এই পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটে।