করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট যে খুব একটা সহজ নয়, সেই ব্যাপারে একাধিকবার সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এবার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে বার্তা দিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী ড. সৌমা স্বামীনাথন। আগামী কয়েকদিনে যে হাসপাতালগুলিতে কীভাবে ভিড় বাড়তে চলেছে, সেই বার্তা দিয়েছেন তিনি। তিনি জানান, ওমিক্রনের সংক্রমণ অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ছড়াবে। এত বেশি মানুষ অসুস্থ হবে যাতে হাসপাতালের সাধারণ বেড থেকে আইসিইউ কিংবা আউটডোর ভরে যাবে রোগীতে।
স্বামীনাথন জানিয়েছেন, নতুন ভ্যারিয়েন্টে অনেকের ক্ষেত্রেই উপসর্গ না থাকার বা মৃদু উপসর্গ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু তাতেও বিপদ কিছু কমবে না। কারণ অসুস্থ বোধ করলে মানুষ ছুটে যাবেন হাসপাতালে চিকিৎসকের কাছে। তাই হাসপাতালে আইসিইউ বা সাধারণ বেডের পাশাপাশি আউটডোরেও বাড়বে ভিড়। রোগীর অনুপাতে চিকিৎসকের সংখ্যা কম হয়ে যেতে পারে বলে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
রোগীর সংখ্যা চিকিৎসকের অনুপাতে অনেক বেড়ে যেতে পারে। তাই সৌমা স্বামীনাথনের পরামর্শ স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় টেলি কনসালটেশনে ওপর জোর দিতে হবে। ওমিক্রনের কারণে যেভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে তাতে টেলি হেলথ বা টেলিমেডিসিন ছাড়া আর কোনও গতি নেই বলেই মনে করছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, ফোনে যদি রোগীকে ওষুধ দেওয়া যায় বা চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া যায় তাহলে হাসপাতলে পর্যাপ্ত চিকিৎসক থাকতে পারবে, পাশাপাশি বেশিরভাগ রোগী যাতে বাড়িতে চিকিৎসা পায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
সৌমা স্বামীনাথন তাদের সতর্ক করেছেন, যারা ভাবছেন যে ওমিক্রন একটা সাধারণ জ্বরের মতো অসুখ, এতে বিশেষ চিন্তার কোনও কারণ নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী মনে করেন, এখনও পর্যন্ত এমনটা ভাবার সময় আসেনি। অদূর ভবিষ্যতে ওমিক্রন কতটা জটিলতা তৈরি করবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
সেই সঙ্গে তিনি উল্লেখ করেছেন যে দক্ষিণ আফ্রিকা ব্রিটেনে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, ডেল্টার তুলনায় চার গুণ বেশি দ্রুত ছড়াচ্ছে ওমিক্রন। তিনি হিসেব দিয়ে বলেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণে যেখানে ৪০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেখানে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৪০ হাজার। অন্যদিকে ডেল্টা আক্রান্ত হয়ে যত মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, সেই তুলনায় ওমিক্রনের ক্ষেত্রে সেই হাসপাতালে ভর্তি হবার প্রবণতা এক-চতুর্থাংশ। সুতরাং হিসাব করে দেখলে বোঝা যাবে যে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা দুইটি ক্ষেত্রেই একই থাকছে।