বৃহদান্ত্র এবং ক্ষুদ্রান্ত্রের সংযোগস্থলে বৃহদান্ত্রের সঙ্গে যুক্ত একটি ছোট্ট থলির মতো অঙ্গটিকে অ্যাপেন্ডিক্স বলা হয়। লম্বায় এটি ২ থেকে ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। থাকে তলপেটের ডান দিকে। এর সঠিক কাজ যে কী, তা এখনো অস্পষ্ট।
তাই এটিকে অকেজো অঙ্গ বলা হয়। কিন্তু এই ছোট্ট থলেতে আকস্মিক প্রদাহ হলে দেখা দেয় অসহনীয় ব্যথা।
অ্যাপেন্ডিক্সের এই সমস্যাটি অ্যাপেনডিসাইটিস নামে পরিচিত। যথা সময়ে অস্ত্রোপচার না করালে বা সময় মতো সমস্যা ধরা না পড়লে অ্যাপেনডিসাইটিসের কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। বিশ্বের প্রায় ৫ শতাংশ মানুষের প্রাণ সংশয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায় এই অঙ্গটি।
সেজন্য চিকিৎসা বিজ্ঞানে একে ‘সার্জিক্যাল এমার্জেন্সি’ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়। তাই অ্যাপেনডিসাইটিসের সমস্যা কখনও অবহেলা করা উচিত নয়।
অ্যাপেনডিসাইটিস কীভাবে এবং কেন হয়?
কোনও কারণে অ্যাপেন্ডিক্সে খাদ্যকণা বা ময়লা ঢুকে গেলে সেখানে রক্ত আর পুষ্টির অভাব দেখা দেয়।
শুধু তাই নয় সেখানে নানা রকম জীবাণুর আক্রমণে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। ফলে অ্যাপেনডিক্সে ব্যথা হতে শুরু করে।
অ্যাপেনডিসাইটিসের উপসর্গ ও লক্ষণসমূহ:
১. পেটে ব্যথা হয়। সাধারণত, নাভির কাছ থেকে শুরু হয়ে পেটের ডান দিকের নিচের দিকে ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে,
২. ক্ষুধামন্দা বা খিদে না পাওয়া,
৩. বমি বমি ভাব,
৪. বমি হওয়া,
৫. ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে যাওয়া,
৬. জ্বর জ্বর ভাব। তবে এ ক্ষেত্রে শরীরের তাপমাত্রা খুব বেশি হয় না,
৭. অ্যাপেন্ডিক্স কোনও কারণে ফেটে গেলে সারা পেট জুড়ে মারাত্মক ব্যথা অনুভূত হয় এবং পেট ফুলে ওঠে।
চিকিৎসা কী
অ্যাপেন্ডিসাইটিসের চিকিৎসা হলো আক্রান্ত অংশ বা অ্যাপেন্ডিক্স যত দ্রুত সম্ভব অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কেটে ফেলে দেওয়া। অস্ত্রোপচারের ভয়ে অনেকে হাসপাতালে যেতে চান না। অনেক সময় শিশু বা বেশি বয়স্করা ব্যথার সঠিক বর্ণনাও দিতে পারে না। কিন্তু জটিলতা এড়াতে পেটে ব্যথা তীব্র ও স্থায়ী অথবা থেকে থেকে হলে রোগীকে শক্ত খাবার দেওয়া থেকে বিরত থাকুন বা মুখে খাবার দেওয়া বন্ধ রাখুন এবং দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান।
মনে রাখতে হবে অ্যাপেন্ডিক্স কোনও কারণে ফেটে গেলে রোগীকে বাঁচানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই অ্যাপেনডিসাইটিসের উপসর্গগুলো চিনে আগে থেকেই সতর্ক হওয়া জরুরি।
বিডি প্রতিদিন/কালাম