প্রচণ্ড গরমে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়লে করণীয়

0
315
warm
Spread the love

গরমে সুস্থ থাকতে প্রচুর পানি খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, গরমে শারীরিক সমস্যাগুলোর মূল কারণ শরীরে পানির অভাব। তাই চিকিৎসকরা বলছেন, তেষ্টা না পেলেও পানি খেতে হবে।

শরীর ঠান্ডা করতে প্রয়োজনে আইস ওয়াটার বা ঠান্ডা জলে বার বার গা ধোওয়ার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এই গরমে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখাটাই বড় চ্যালেঞ্জ। প্রবল গরমে শরীরের তাপমাত্রাও বেড়ে যায়। ঠান্ডা পানিতে গোসল সেই সমস্যা কাটাবে।

গরমে রাস্তায় বেরিয়ে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। চিকিৎসকদের কথায়, এই ধরনের অসুস্থতার কারণ হিট স্ট্রোক হতে পারে। যার মূল কারণ, শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত বৃদ্ধি।

পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রা বা বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখে মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস। বাইরের তাপমাত্রা খুব বেড়ে গেলে বা কমে গেলে শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত বাড়লেই হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা দেখা যায়। এই হিট স্ট্রোকের উপসর্গ আগে থেকে বুঝতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এছাড়া আর কী কী সমস্যা হতে পারে? হলে কী করবেন, সেই পরামর্শও দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রথমেই সানবার্ন বা প্রবল রোদে ত্বক পুড়ে যাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেছেন চিকিৎসকরা। এক্ষেত্রে সাধারণত ত্বক লাল হয়ে যায়। সঙ্গে ত্বকে ফুসকুড়িও দেখা যেতে পার।

‘সানবার্ন’ হলে ত্বকের আক্রান্ত জায়গাটিতে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে কিছু না লাগানোই ভালো। ফুসকুড়ি হলে তা ফাটানোর কোনো চেষ্টা যেন করা না হয়। বদলে চড়া রোদে না থাকা, ঠান্ডা জলে ভেজানো কাপড় ত্বকের উপর রাখা, তারপরও না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।

গরমে ত্বক লাল হয়ে যেতে পারে। অনেকটা অংশ জুড়ে র‍্যাশ বেরতে পারে। একে ‘হিট র‍্যাশ’ বলা হয়। ‘হিট র‍্যাশ’ এড়াতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। রোদ এড়িয়ে ছায়া বা ঠান্ডা জায়গায় থাকলে এই সমস্যা এড়ানো যেতে পারে।

শরীরে জলের ঘাটতি হলে এবং খনিজ পদার্থ বেরিয়ে গেলে পেশিতে টান ধরতে পারে। শরীর জলশূন্য হয়ে গেলে পেটে ব্যথা করতে পারে। একে ‘হিট ক্র্যাম্পস’ হলা হয়। এই সমস্যা এড়াতে জল বেশি করে খেতে হবে, প্রয়োজনে লবণ-চিনি জল বা ওআরএস হাতের কাছে রাখতে হবে, প্রয়োজন বুঝলে খেকে হবে, ছায়া বা ঠান্ডা জায়গায় থাকতে হবে।

অতিরিক্ত ঘাম হলে, নাড়ির গতি দুর্বল হলে এবং এই সব কিছুর সঙ্গে গা গোলানো ভাব বা বমি হওয়া, মাথা ব্যথা এবং দুর্বলতা থাকলে ধরে নিতে হবে ‘হিট এগজরশন’-এ আক্রান্ত হয়েছেন। এ ধরনের অসুস্থতা বোধ করলে পোশাক ঢিলে করে দিতে হবে। ঘাড়ে, গলায় ভেজা কাপড় দিয়ে মোছার পাশাপাশি বেশি করে জল খাওয়া, রোদে থাকলে দ্রুত ছায়া আছে এমন জায়গায় আশ্রয় নিতে হবে। তবে এক্ষেত্রে উপসর্গ বাড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।

‘হিট স্ট্রোক’-এ শরীরে তাপমাত্রার ভারসাম্য থাকে না। তাই ঘাম হয় না। কিন্তু হিট স্ট্রোক হলে তা থেকে মস্তিষ্ক, কিডনি, হৃদযন্ত্রে প্রভাব পড়তে পারে। রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। ভুল বকতে পারেন। ঘাম না হওয়ায় শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে ১০৩-১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। এর পাশাপাশি মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরার মতো উপসর্গও দেখা যেতে পারে।

এমন সমস্যা হলে দ্রুত রোগীকে চিকিৎসকের কাছে বা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে রোগীকে ঠান্ডা জলে গোসল বা ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছিয়ে দেওয়া।

এছাড়া গরম থেকে বাঁচতে যখন তখন যেকোনো ঠান্ডা পানীয় বা রাস্তায় বিক্রি হওয়া কাটা ফল খাওয়ার বিষয়েও সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের কথায়, এই ধরনের পানীয় বা কাটা ফলে জীবাণু থাকে। তা থেকে ডায়রিয়া, হেপাটাইটিস হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে