ফুসফুসের ক্যান্সার : প্রতিরোধই সমাধান

0
207
Spread the love

ফুসফুসের শ্বাসনালি, বায়ুথলি ও মিউকাস গ্ল্যান্ডের এপিথেলিয়াম কোষ থেকে সৃষ্ট ক্যান্সার হলো ফুসফুসের ক্যান্সার। রোগটির বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক ডা. মো. রাশিদুল হাসান, ইনজিনিয়াস হেলথকেয়ার লিমিটেডের চেয়ারম্যান, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ

ফুসফুসের ক্যান্সারের বিভিন্ন ধাপ রয়েছে। শুরুতে শনাক্ত করে চিকিৎসা নিলে জটিলতা এড়ানো যায়। বিশ্বব্যাপী পুরুষের মৃত্যুর প্রথম কারণ ফুসফুসের ক্যান্সার, আর নারীদের ক্ষেত্রে এটি দ্বিতীয় কারণ।

ধরন

টিউমার ক্যান্সার কোষের ভিত্তিতে ফুসফুসের টিউমার ক্যান্সারকে স্মল ও নন-স্মল সেল এই দুই ভাগে ভাগ করা যায়। ভাগগুলো হলো স্কোয়ামাস, এডিনোকরলিনোমা ও লার্জ সেল।

কারণ

♦ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ধূমপান (৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে দায়ী)

♦ তামাকজাত দ্রব্য সেবন, পান-সুপারি, জর্দা ইত্যাদি গ্রহণ

♦ ঘন ঘন ফুসফুসের সংক্রমণ

♦ নিকেল, ক্রোমিয়াম ও জৈব পদার্থ, বেনজিন, বেনজোপাইরিন বায়ুর সঙ্গে ফুসফুসে প্রবেশ

♦ পেট্রোলিয়াম কেমিক্যাল বা রাবার কারখানায় কাজের প্রভাব

♦ বংশে কারোর এই ক্যান্সার থাকা

♦ পরিবেশদূষণ

♦ অন্যের দ্বারা উৎপাদিত ধোঁয়ায় শ্বাস নেওয়া ইত্যাদি

চিকিৎসা

সার্জারি : ফুসফুস ক্যান্সারের জন্য সার্জারি হলো অন্যতম প্রধান চিকিৎসা। সার্জারি নির্ভর করে ক্যান্সার টিউমারের ধরন, আকৃতি, অবস্থান এবং রোগীর শারীরিক অবস্থার ওপর। ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলে সার্জারির মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ টিউমার অপসারণ করা যায়। অনেক ক্ষেত্রে অসুখের মাঝামাঝি পর্যায়েও সার্জারি করা হয়। আবার সার্জন সম্পূর্ণ ফুসফুসটিও অপসারণ করতে পারেন।

কেমোথেরাপি : এতে ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে ক্যান্সার কোষ সংকুচিত বা ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়। তবে অতিরিক্ত বমি ভাব, চুল পড়া, ওজন হ্রাসসহ এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

টার্গেটেড থেরাপি : টার্গেটেড থেরাপি হলো এক ধরনের ক্যান্সারের চিকিৎসা, যা ওষুধ বা অন্যান্য পদার্থ ব্যবহার করে নির্দিষ্ট ক্যান্সার কোষগুলোকে সুনির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করতে পারে। ফলে ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধি, বিভাজন ও ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রিত হয়।

প্রতিরোধে করণীয়

ফুসফুসের ক্যান্সার সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য নয়। তবে প্রতিরোধযোগ্য। অর্থাৎ আগেভাগে সচেতন হলে এই ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়।

♦ ধূমপান পুরোপুরি ত্যাগ করতে হবে। ধূমপান করে এমন ব্যক্তির সংস্পর্শও এড়িয়ে চলতে হবে। কেননা পরোক্ষ ধূমপানও এর জন্য দায়ী। ধূমপায়ীদের উচিত ফুসফুসের ক্যান্সারের স্ক্রিনিং করা। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে জটিলতা কমানো যায়।

♦ গড়ে তুলুন সঠিক খাদ্যাভ্যাস। সবুজ তাজা শাক-সবজি ও ফলমূল নিয়মিত খান।

♦ শিল্প-কারখানা, গাড়ির নির্গত কালো ধোঁয়া থেকে বিরত থাকুন।

♦ ক্রোমিয়াম, এসবেস্টস, ক্যাডমিয়াম ইত্যাদি বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে চলুন। এসব পদার্থ রয়েছে এমন পরিবেশে কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।

♦ যক্ষ্মা, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া, অ্যাজমা ইত্যাদি হলে দ্রুত চিকিৎসা করান। এসব রোগের কারণে ফুসফুসের আক্রান্ত স্থানে ক্যান্সার দেখা দিতে পারে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে