বন্ধ হচ্ছে অবৈধ হাসপাতাল ক্লিনিক!

0
962
Spread the love

দুই হাজার হাসপাতাল-ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার অবৈধ । ১৩ হাজার হাসপাতাল লাইসেন্স নবায়নের আবেদন করেছে
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের টাস্কফোর্সের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে প্রায় ১৩ হাজার বেসরকারি হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়নের জন্য অনলাইনে আবেদন জমা পড়েছে। নবায়ন হয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স। অপেক্ষমাণ আবেদনের সংখ্যা প্রায় আট হাজার। এখনো আবেদন করেনি এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। নবায়নের আবেদন না করা এসব প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত করে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. ফরিদ হোসেন মিয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এ পর্যন্ত প্রায় ১৩ হাজার হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করেছে। প্রায় দুই হাজার প্রতিষ্ঠান আবেদন করেনি। যারা আবেদন করেনি তাদের অবৈধ ঘোষণা করে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দ্রুতই চিঠি দিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানকে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হবে।’ স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল শাখা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮২ সাল থেকে এ পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে বিভিন্ন সময়ে নিবন্ধন নিয়ে সারা দেশে সাড়ে ১৫ হাজারের কিছু বেশি প্রতিষ্ঠান হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক, ব্লাড ব্যাংক পরিচালনা করে আসছে। ৮ আগস্ট টাস্কফোর্সের ঘোষণার পর থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত ১২ হাজার ১২৭টি আবেদন জমা পড়েছে। এখনো আবেদন করেনি এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩ হাজার ৪৭৩টি। এ পর্যন্ত যেসব প্রতিষ্ঠান অবেদন করেছে তার মধ্যে চার হাজার প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র যাচাইয়ের অপেক্ষায় আছে। যাচাই-বাছাইয়ের পর কিছু কাগজপত্রে সমস্যা থাকায় তিন হাজার ৫০০টি আবেদন অপেক্ষামাণ রাখা হয়েছে। সব নিয়মনীতি সম্পন্ন করে প্রায় পাঁচ হাজার প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নবায়ন হয়েছে। তবে ত্রুটিপূর্ণ বা অসম্পূর্ণ আবেদন, দেরিতে আবেদন ইত্যাদি কারণে নির্ধারিত সময়ে লাইসেন্স নবায়ন করতে না পারা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭ হাজার ৬০৮টি। বিভাগভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ঢাকায় আবেদন করেছে তিন হাজার ৪৮৫টি, চট্টগ্রামে দুই হাজার ৪৬৭টি, রাজশাহীতে এক হাজার ৬৬৭টি, রংপুরে ৯৬৪টি, খুলনায় এক হাজার ৫৯২টি, বরিশালে ৭৪০টি, সিলেটে ৫০৭টি ও ময়মনসিংহে ৭০৫টি। টাস্কফোর্সের হাসপাতাল নবায়ন-সংক্রান্ত ঘোষণার পর বেসরকারি হাসপাতালগুলো লাইসেন্স নবায়নে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এর আগে বেশিরভাগ হাসপাতাল, ক্লিনিক লাইসেন্স নবায়নে অনাগ্রহী ছিল। লোকবল সংকটে ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের তৎপরতায়ও ঘাটতি ছিল। সারা দেশের ১৫ হাজারের বেশি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক প্রতিষ্ঠান দেখাশোনার জন্য এ শাখায় পরিচালক থেকে শুরু করে মেডিকেল অফিসার মিলিয়ে কর্মকর্তা ১১ জন। যার মধ্যে একজন পরিচালক, দুজন উপ-পরিচালক, তিনজন সহকারী পরিচালক এবং পাঁচজন মেডিকেল অফিসার। অধিদফতরের হাসপাতাল শাখা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের নিবন্ধন ফি এবং নিবন্ধন নবায়ন ফি পাঁচ হাজার থেকে বাড়িয়ে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার ও সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপর চার হাজার ২০০ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার লাইসেন্স নবায়নের আবেদন করলেও বাকি ১১ হাজারের বেশি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক নিবন্ধন ছাড়াই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকে। প্রতি বছর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর লাইসেন্স নবায়নের জন্য পরিবেশ ছাড়পত্র, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিস্তারিত বিবরণ, সিটি করপোরেশনের ছাড়পত্র, কর সার্টিফিকেট এবং অন্যান্য নথি প্রয়োজন পড়ে। নিবন্ধন নবায়ন করতে এসব হাসপাতালকে নিয়মিত নোটিস দেওয়ার পাশাপাশি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
কিন্তু বেশিরভাগ হাসপাতাল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপডেট না থাকায় তারা লাইসেন্স নবায়ন করতে চায় না। টাস্কফোর্সের ঘোষণার পর অধিক সংখ্যক হাসপাতাল লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করেছে।

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে