ভারতের মহারাষ্ট্রে গিলেন-বারি সিনড্রোম (জিবিএস) রোগে আক্রান্ত হয়ে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে ভারতের পুণেতে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০১ জন, যাদের মধ্যে অন্তত ৬০ জনের শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক। তাদের ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখতে হয়েছে। মহারাষ্ট্র স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে ১৯ জনের বয়স ৯ বছরের নীচে। চিকিৎসকদের অনুমান, ভাইরাস থেকেই হচ্ছে এই রোগ। খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের।
গিলেন-বারি সিনড্রোম স্নায়ুর এক বিরল রোগ, যা শরীরকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত করে দিতে পারে কিছু দিনের মধ্যেই। স্নায়ু দুর্বল হতে শুরু করে, পেশি দুর্বল হয়ে যায়। রোগীর মুখ বেঁকে যেতে পারে, হাঁটাচলা করা বা কথা বলার ক্ষমতা থাকে না অনেক সময়েই। সেই সঙ্গে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। চিকিৎসকেরা বলেন, এটি অটোইমিউন ডিজঅর্ডার, অর্থাৎ যখন নিজের শরীরেরই রোগ প্রতিরোধ শক্তি নিজেরই স্নায়ুতন্ত্রকে দুর্বল করতে শুরু করে।
কাদের হচ্ছে এই রোগ?
এ বিষয়ে স্নায়ুরোগ চিকিৎসক অনিমেষ কর বলেন, “কম্পাইলোব্যাক্টর, সাইটোমেগালোভাইরাসের মতো কয়েক রকম ভাইরাসের সংক্রমণে এই রোগ হতে পারে। কোভিডের পরে গিলেন-বারি সিনড্রোমে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছিল। সাধারণত দেখা যায়, যারা শ্বাসযন্ত্রের কোনো রোগ সারিয়ে উঠছেন বা গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিসের মতো রোগে ভুগেছেন, তাদেরই পরে গিয়ে গিলেন-বারি সিনড্রোম হয়েছে। অনেক সময়ে কোনো ওষুধ বা প্রতিষেধকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেও এই রোগ হতে পারে।”
পুণেতে আক্রান্তদের অনেকেরই শ্বাসের সমস্যা দেখা গিয়েছে। অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হচ্ছে। ওই রোগীদের রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। আক্রান্তদের ৯ জনের শরীরে নোরোভাইরাস পাওয়া গিয়েছে, ৩ জনের রক্তে ক্যাম্পাইলোব্যাক্টর জেজুনি নামে এক ধরনের ভাইরাসের খোঁজ মিলেছে।
কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে গিলেন-বারি?
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে এই রোগে। এমনটাই বলছেন স্নায়ুরোগ চিকিৎসক কিশলয় করণ। তার কথায়, “রোগীর যদি শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে, তা হলে চিন্তার কারণ আছে। অনেক সময়েই দেখা যায়, রোগীর রেসপিরেটরি প্যারালাইসিস হয়ে গিয়েছে। তখন ভেন্টিলেটর সাপোর্ট দিতেই হবে। সেই সময়ে রোগী কথাও বলতে পারবে না, শ্বাসও নিতে পারবে না।”