ভারতে ডায়াবেটিসের নতুন রূপ ‘মোডি’, আক্রান্ত হতে পারে শিশুরাও

0
35
prediabetes
Spread the love

টাইপ ৫ ডায়াবেটিস নিয়ে বেশ হইচই হচ্ছিল বেশ কিছুদিন ধরে। নতুন ধরনের ডায়াবেটিস কেন হচ্ছে এবং এর প্রতিকার কী, তা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছিলেন গবেষকেরা। এবার আরও এক ধরনের ডায়াবেটিসের খোঁজ পাওয়া গেল ভারতে। নতুন এ ধরনের নাম ‘ম্যাচুরিটি-অনসেট ডায়াবেটিস অফ দ্য ইয়ং (মোডি)। শিশু ও কমবয়সিরাই বেশি আক্রান্ত। নবজাতকের শরীরেও দেখা দিতে পারে ডায়াবেটিসের এই নতুন রূপ। গবেষকেরা বলছেন, অত্যন্ত বিরল এই রোগ বংশগত।

জিনের বিন্যাসের ওলটপালটেই দেখা দিতে পারে ‘মোডি’ ডায়াবেটিস, এমনটাই জানাচ্ছেন ভারতের চেন্নাইয়ের ‘মাদ্রাজ ডায়াবেটিস রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ (এমডিআরএফ)-এর গবেষকেরা।

গবেষকেরা দাবি করেছেন, ভারতে মোডি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অনেক শিশু ও কমবয়সিদের খোঁজ পাওয়া গেছে। কী থেকে এই ডায়াবেটিস হচ্ছে, কেনই বা হচ্ছে, এর প্রতিকারের উপায় নিয়ে নতুন করে গবেষণা শুরু হয়েছে।

আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন থেকে প্রকাশিত ‘ডায়াবেটিস’ নামক মেডিক্যাল জার্নালে এই গবেষণা বিষয়ক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে ভারত ও আমেরিকার গবেষকেরা দাবি করেছেন, ‘এবিসিসি৮’ নামক একটি জিনের বিন্যাসে গন্ডগোল হলেই এই ডায়াবেটিস হতে পারে। ‘এবিসিসি৮’ জিনটি অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন হরমোন ক্ষরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

যদি কোনোভাবে জিনটিতে রাসায়নিক বদল (মিউটেশন) ঘটতে থাকে, তাহলে সেটির কাজ করার প্রক্রিয়া বদলে যাবে। বদল হবে তার বিন্যাসেও। তখন শরীরের ভিতরের কোষগুলোই বিদ্রোহ করে ‘অটোইমিউন’ রোগের কারণ হয়ে উঠবে। মোডি ডায়াবেটিস তেমনই একটি রোগ। একে ‘মোনোজেনিক ডায়াবেটিস’ বলেন অনেকে। খুব কম জনের এই রোগ হয়। আর তা বংশগত ভাবে ছড়াতে থাকে।

এমডিআরএফ-এর গবেষক রাধা ভেঙ্কটেশন জানিয়েছেন, রোগটি শৈশবেই প্রকাশ পায়। যেহেতু জিনের বদলের কারণে এই ডায়াবেটিস হয়, তাই সেটির উপসর্গ টাইপ ১ ও টাইপ ২ ডায়াবেটিসের চেয়ে আলাদা। সে কারণে রোগটি ধরা পড়ে না সহজে।

এমনও দেখা গেছে, বাবা-মায়ের থেকে বদলে যাওয়া জিন সন্তানের মধ্যে এসে এই বিরল রোগের কারণ হয়ে উঠেছে। শিশুর শরীরে যখন রোগটি দেখা দেয়, তখন রক্তে শর্করার মাত্রা আচমকাই কমতে থাকে। হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘কনজেনিটাল হাইপারইনসুলিনিজ়ম’ (সিএইচআই)। শিশুটি যত বড় হতে থাকবে ততই তার রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে থাকবে। ৩০ বছর হওয়ার আগেই পরিস্থিতি উল্টে যাবে। তখন রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যাবে।

মোডি ডায়াবেটিসের আরও অনেক প্রকার রয়েছে, যেমন ‘মোডি ১’, ‘মোডি ৩’, ‘মোডি ১২’ ইত্যাদি। সবগুলো ভাগ নিয়ে গবেষণা চলছে। এখনোই এই ডায়াবেটিসকে কাবু করার মতো ওষুধ বা প্রতিষেধক তৈরি হয়নি।

গবেষকরা জানিয়েছেন, বিরল এই ডায়াবেটিসের চিকিৎসাপদ্ধতি ও ওষুধ নিয়ে গবেষণা চলছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে