হাড়ের সুস্থতা ও ক্ষয় রোধে ভিটামিন ‘কে’ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন। একজন পূর্ণবয়স্ক পুরুষের প্রতিদিন ১৩৮ মাইক্রোগ্রাম এবং নারীর ১২২ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ‘কে’ প্রয়োজন। লাল মরিচ, কলা, সবুজ শাক-সবজি, টমেটো, শসা, ফুলকপি, ধনেপাতা, ব্রকলি, বাঁধাকপি, শক্ত পনির ইত্যাদিতে ভিটামিন ‘কে’ আছে। ভিটামিন ‘কে’-এর ধরন দুটি। ভিটামিন ‘কে১’ ও ভিটামিন ‘কে২’। সবুজ শাক-সবজি, শিম, বেদানা, মিষ্টি কুমড়ায় ভিটামিন ‘কে১’ আছে। মাখন, পনির, গরুর কলিজা ও ডিমের কুসুমে আছে ভিটামিন ‘কে২’।
ঘাটতি কেন হয়?
ভিটামিন ‘কে’-এর ঘাটতি সাধারণত তখনই ঘটে থাকে, যখন আপনি আপনার ডায়েট থেকে এই ভিটামিন পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্রহণ করেন না। রক্ত পাতলা, দীর্ঘ মেয়াদে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার এবং কোলেস্টেরল হ্রাসের ওষুধগুলোর কারণেও ভিটামিন ‘কে’-এর ঘাটতি হতে পারে।
ভিটামিন ‘কে’-এর কাজ
* রক্তক্ষরণের সময় রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
* হাড়ের গঠনে সাহায্য করে।
* মানবদেহে অতিরিক্ত গ্লুকোজ গ্লাইকোজেন হিসেবে যকৃতে জমা রাখতে সহায়তা করে।
* ক্যান্সার কোষ গঠনে বাধা দেয়।
* গর্ভাবস্থায় মর্নিং সিকনেস কমাতে সাহায্য করে।
ভিটামিন ‘কে’ সমৃদ্ধ খাবার
পালংশাক
পালংশাকে বেশি ভিটামিন ‘কে’ পাওয়া যায়। এ ছাড়া পালংশাক নানা রকমের পুষ্টি উপাদান, যেমন—ভিটামিন ‘এ’, ‘বি’, ‘ই’, ম্যাগনেসিয়াম, ফোলায়েট ও লৌহসমৃদ্ধ।
লেটুস
লেটুসের এক পাতায় ৩.৬২ এমসিজি ভিটামিন ‘কে’ থাকে। এ ছাড়া এতে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট থাকে, যা মূলত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এসব উপাদান শরীরকে রোগমুক্ত ও সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
বাদাম
বিভিন্ন ধরনের বাদামে রয়েছে ভিটামিন ‘কে’। কাজুবাদাম কিংবা ওয়ালনাট হলো ভিটামিন ‘কে’-এর অন্যতম ভালো উৎস।
সয়াবিন
দুই ধরনের ভিটামিন ‘কে’ রয়েছে ভিটামিন ‘কে-১’ ও ‘কে-২’। ভিটামিন ‘কে-১’ উদ্ভিদ থেকে আসে এবং ভিটামিন ‘কে-২’ সামান্য পরিমাণে প্রাণিজ উৎস এবং গাঁজানো খাবার, যেমন—পনির থেকে আসে। তবে সয়াবিন ও সয়াবিন তেল থেকেও ভিটামিন ‘কে-২’ পাওয়া যায়।
বেদানা
প্রতি ছয় আউন্স বেদানায় ১৯ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ‘কে’ পাওয়া যায়। বেদানায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, পটাসিয়াম। হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ঠিক রাখতে প্রতিদিন এক কাপ বেদানার রস খাওয়া যেতে পারে।
এ ছাড়া শালগম, ডিমের কুসুম, কলিজা, ডাল, সয়াবিন, ভুট্টা, পনির, দই, ফর্টিফায়েড দুধ ইত্যাদিতে যথেষ্ট পরিমাণ ভিটামিন ‘কে’ পাওয়া যায়।