ভিটামিন ডি’র প্রয়োজনীয়তা

0
6
Spread the love

ভিটামিন ডি একটি চর্বিতে দ্রবণীয় যা শরীরের ক্যালসিয়াম, ফসফেট ইত্যাদির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ভিটামিন ডি অস্থির কাঠামো তৈরি এবং ঘনত্ব বৃদ্ধিতে প্রভূত ভূমিকা রাখে। নাম শুনে ভিটামিন মনে হলেও ভিটামিন ডি আসলে একটি স্টেরয়েড হরমোন। অন্যান্য ভিটামিন যেখানে অ্যান্টি অক্সিজেন বা কো-এনজাইম হিসেবে কাজ করে, ভিটামিন ডি (স্টেরয়েড হরমোন) জিন এক্সপ্রেশন নিয়ন্ত্রণ করে অর্থাৎ দেহের প্রোটিন তৈরিতে নিয়ন্ত্রণকারীর ভূমিকায় থাকে। প্রাণীজ ও উদ্ভিদজাত স্টেরল ও ফাইটোস্টেরল হতে সূর্যালোকের অতি বেগুনি রশ্মি দ্বারা রূপান্তরিত হয়ে দেহে ভিটামিন ডি তৈরি হয়। ভিটামিন ডি-২ ও ভিটামিন ডি-৩ মানব দেহে থাকে।

ভিটামিন ডি’র অভাবে যেসব উপসর্গ

শিশুদের মধ্যে : গুরুতর ভিটামিন ডি অভাবে রিকেটস রোগ (হাড় বাঁকা), শিশু পেশি খিঁচুনি, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা, হাঁপানি, চর্ম রোগ এবং এসব শিশুর ক্যালসিয়ামের স্বল্পতাও দেখা দেয়, সে জন্য শীতপ্রধান দেশের শিশুরা ৪০% বেশি আক্রান্ত হয় গ্রীষ্মপ্রধান দেশের চেয়ে, তার কারণ সেখানের শিশুরা রোদ থেকে ভিটামিন ডি জোগান খুব কম পায় বিধায় খাবার থেকে গ্রহণ করলেও অনেক সময় ঠিকমতো হজম শক্তির অভাবে বণ্টিত হয় না (ব্রিটেনে প্রতি ৫ জনে একজন ভিটামিন ডি স্বল্পতায় ভোগে থাকেন)।

রিকেটস : ভিটামিন ‘ডি’এর অভাব হলে এবং ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে ক্যালসিয়াম শরীরে শোষিত হতে না পারলে রিকেটস হয়, কেননা হাড় গঠনের জন্য ক্যালসিয়াম এবং ফসফেট অতি প্রয়োজনীয় উপাদান কিন্তু ভিটামিন ডি তা ক্ষুদ্রান্ত্রে শোষণে সাহায্য করে বিধায় হাড়ের ভঙ্গুরতা বা ক্ষয় হওয়া অথবা নরম হওয়া থেকে রক্ষা করে। বিশেষ করে শিশুদের বেলায় জন্মের তিন মাস থেকে ১৮ মাস পর্যন্ত যদি তার শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি জোগান দেওয়া না হয় তখন তার পা বা হাত বেঁকে যাওয়া বা ভঙ্গুর হওয়া দেখা দিতে পারে।

প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে ভিটামিন ডি অভাবে :

ক্লান্তবোধ এবং অস্পষ্ট ব্যথা হয়। যন্ত্রণাটি মাংসপেশি না হাড়ের মধ্যে করে তা অনেক সময় বয়স্ক রোগীর বেলায় বুঝাতে খুব কষ্ট হয়, তবে গুরুতরভাবে ভিটামিন ডি অভাব দেখা দিলে অস্টিওমেলাসিয়া জাতীয় আসুখ হবেই এটাই নিশ্চিত। সাধারণভাবে যা দেখা যায় পেশির দুর্বলতা, সিঁড়ি আরোহণ করতে কষ্ট অনুভব, মেঝে বা চেয়ার থেকে উঠতে বসতে ভীষণ কষ্ট পাওয়া, পায়ের মাংসপেশিসমূহ হাড়ের সঙ্গে জড়িয়ে ধরার মতো মনে হয়। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক ইত্যাদি অন্যান্য অসুখে ভিটামিন ডি যে যোগসূত্র আছে। তাই শরীর ভালো থাকতে শরীরের রিজার্ভ পদার্থ সমূহের দিকে একটু লক্ষ রাখা উচিত। তখন খাবারের মাধ্যমেই ভিটামিন ডি বা অন্যান্য খনিজ পদার্থ গ্রহণ করতেই হবে।

লেখক :

ডা. শাহজাদা সেলিম

সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বিএসএমএমইউ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে