আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো মস্তিষ্ক। এটি আমাদের শরীরের সমস্ত অঙ্গকে কাজ করার নির্দেশ দেয়। মস্তিষ্কের অনুশীলনে মনোযোগ না দিলে ধীরে ধীরে বুদ্ধিমত্তা ও যুক্তি শক্তি কমে যাবে। শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মতো মস্তিষ্কের সর্বোত্তমভাবে কাজ করার জন্য নির্দিষ্ট পুষ্টির প্রয়োজন। তাই মস্তিষ্কের যত্ন নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
যানবাহন চালানোর জন্য যেমন জ্বালানির প্রয়োজন, তেমনই আমাদের মস্তিষ্কেরও তীক্ষ্ণ ও সুস্থ রাখার জন্য খাবারের আকারে জ্বালানির প্রয়োজন। উল্টোদিকে কিছু জিনিস আমাদের মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকারক বলে মনে করা হয়। এই খাবারগুলো ধীরে ধীরে স্মৃতিশক্তি, মেজাজ ও একাগ্রতার ক্ষতি করে।
কী সেসব খাবার, চলুন জেনে নিই—
চিনিযুক্ত পানীয়
মিষ্টি কোলা বা পানীয় এবং চিনি দেওয়া চা মস্তিষ্কে অত্যধিক গ্লুকোজ ভরে দেয়। এগুলো স্মৃতিশক্তির ক্ষতি করতে পারে, শেখার ক্ষমতা হ্রাস করতে পারে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ডিমেনশিয়াও বাড়াতে পারে।
প্রক্রিয়াজাত খাবার
প্যাকেটজাত খাবার, হিমায়িত খাবার ও ফাস্ট ফুডে প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক ও অস্বাস্থ্যকর চর্বি থাকে। এগুলো মস্তিষ্কে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। যার কারণে আমাদের মনোযোগ দিতে সমস্যা হয় এবং মেজাজও ওঠানামা করে।
ট্রান্স ফ্যাট
পেস্ট্রি, ভাজা খাবারে প্রচুর ট্রান্স ফ্যাট থাকে, যা আপনার ধমনীগুলোকে বন্ধ করে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বন্ধ করে দিতে পারে। এ ছাড়া এটি স্মৃতিশক্তি হ্রাস ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
কৃত্রিম মিষ্টি
ডায়েট সোডা ও চিনিমুক্ত মিষ্টিতে ব্যবহৃত কৃত্রিম মিষ্টি মস্তিষ্কের রসায়নকে ভুল পথে চালিত করে। এটি ক্ষুধা বাড়াতে পারে, স্মৃতিশক্তি দুর্বল করতে পারে এবং চাপ ও বিষণ্নতা বাড়াতে পারে।
পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট
ময়দার রুটি, পেস্ট্রি ও পাস্তা খাওয়ার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এই বৃদ্ধি মস্তিষ্কের কুয়াশা, অলসতা, এমনকি দীর্ঘমেয়াদে মস্তিষ্কের কার্যকারিতার ক্ষতি করতে পারে।
অতিরিক্ত অ্যালকোহল
যদিও অল্প পরিমাণে অ্যালকোহল পান করলে কোনো ক্ষতি হয় না, তবে অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান করলে মস্তিষ্কের টিস্যু হ্রাস পায়, স্মৃতিশক্তি হ্রাস পায় এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়। অ্যালকোহল মস্তিষ্কের কোষের যোগাযোগেও হস্তক্ষেপ করে, যার ফলে চিন্তাভাবনা হ্রাস করে।
ভাজাপোড়া খাবার
ভাজাপোড়া, তৈলাক্ত খাবার, উচ্চ আঁচে ভাজা হলে এগুলো থেকে বিষাক্ত পদার্থ নির্গত হয়। এই বিষাক্ত পদার্থগুলো প্রদাহ বাড়াতে পারে, মস্তিষ্কের কোষগুলোর ক্ষতি করতে পারে।