ফ্রান্সের ফুটবলার পল পগবা সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে হেইনিকেইন ব্র্যান্ডের একটি বিয়ারের বোতল টেবিল থেকে সরিয়ে রাখার পর এ নিয়ে বিস্তর আলোচনার সৃষ্টি হয়।
অ্যালকোহল পান কিংবা তার প্রসার ও বিজ্ঞাপনে অংশ নেওয়া মুসলমানদের জন্য নিষিদ্ধ, তাই একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান হিসেবে এটি অনুভব করেছে এর থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখেন তিনি। খবর বিবিসির।
যুক্তরাজ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় গোষ্ঠী হলো মুসলমানেরা এবং এই সম্প্রদায় দ্রুত বাড়ছে। প্রিমিয়ার লিগেরই বিভিন্ন ক্লাবে ৭০ জনের মতো মুসলিম খেলোয়াড় খেলে থাকেন।
এসব কারণে গত শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে একটি চার্টার বা সনদ প্রকাশ করা হয়েছে, যাকে বলা হচ্ছে— ‘মুসলিম অ্যাথলেট চার্টার’।
এটিকে এ ধরনের প্রথম চার্টার বলে বর্ণনা করা হচ্ছে এবং এ ধারণা এসেছে অলাভজনক সংস্থা নুজাম স্পোর্টসের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী এবাদুর রহমানের মাথা থেকে।
চার্টারে সব মিলিয়ে ১০টি পয়েন্ট রয়েছে, যার মধ্যে অ্যালকোহল পরিহার এমনকি উদযাপনের সময়েও, প্রার্থনার জন্য উপযোগী স্থানের ব্যবস্থা করা, হালাল খাবার এবং রমজান মাসে রোজা রাখার অনুমতি দেওয়া।
এবাদুর রহমান বলেন, আমি খেলাধুলার জগতে কাজ করার সুবাদে জানি যে এখানে আমার ধর্ম মেনে চলা কতটা কঠিন।
ক্লাবগুলো যাতে বাড়িতে ও কাজের জায়গায় এসব খেলোয়াড়ের সমর্থন দেয়, সে ব্যাপারে তাদের সাহায্য দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ চার্টার এবং এর প্রতি যে সমর্থন দেওয়া হচ্ছে, তার প্রয়োজন রয়েছে এবং ক্লাবগুলো একে স্বাগত জানাবে।
নুজাম হিসাব করে দেখেছে, ইংল্যান্ডের চারটি প্রধান ফুটবল লিগের প্রথম টিম এবং অ্যাকাডেমিগুলোয় ২৫০ জনের মতো মুসলিম ফুটবলার আছে।
এদের মধ্যে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পল পগবা, লিভারপুলের সালাহ ও মানে, চেলসির এন’গোলো কন্তে এবং অ্যান্তোনিও রুডিগাররা বিশ্বব্যাপী বেশ পরিচিত।
এই চার্টার প্রকাশিত হওয়ার আগেই প্রিমিয়ার লিগের পাঁচটি এবং ইএফএলের ১৫টি ক্লাব ইতোমধ্যে একে সমর্থন জানানোর অঙ্গীকার করেছে।
‘কিক ইট আউট’ এবং ফুটবল সাপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের মতো ক্যাম্পেইন গোষ্ঠীগুলো বলছে যে, তারা এই উদ্যোগের সঙ্গে আছে।
ব্রেন্টফোর্ড ক্লাবের একজন মুখপাত্র বলেছেন, যুক্তরাজ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় গোষ্ঠী হলো মুসলমানরা এবং এই সম্প্রদায় দ্রুত বাড়ছে। প্রিমিয়ার লিগেরই বিভিন্ন ক্লাবে ৭০ জনের মতো মুসলিম খেলোয়াড় খেলে থাকে।
মুসলমান পুরুষ ও নারী খেলোয়াড়দের সমর্থন করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠার যাতে এগিয়ে আসে, এ চার্টার সেটিই চাইছে। আর যারা এতে স্বাক্ষর করছে, তারা ‘ইতিবাচক পরিবর্তন’ নিয়ে আসার ব্যাপারে অঙ্গীকার করছে।
সংহতি, সমতা এবং নিজেদের ক্লাব ও টিমে মুসলমান খেলোয়াড়রা যে অবদান রাখছে, তাকে স্বীকৃতি দেওয়ার যে ইতিবাচক আন্দোলন, তাতে যোগ দিতে শুরু করেছে ক্লাব ও সংগঠনগুলো।