আর কয়দিন পরেই রমজান। সারা বিশ্বের মুসলিম ধর্মপ্রাণ মানুষ রমজানকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। বছরের এ সময়টাতে জীবনযাপনে পরিবর্তন আসে। খাদ্যাভাসেও আনতে হয় পরিবর্তন।
অনেকে এসময়টাতে ওজন কমানোর জন্য কিটো ডায়েট করে থাকে। কিন্তু রোজা রেখে কিটো ডায়েট কী আসলে অনুসরণ করা উচিত এ বিষয়ে অনেক মতভেদ আছে।
কিটো ডায়েট প্ল্যান:
কিটো ডায়েট হলো লো কার্বহাইড্রেট ও হাই ফ্যাট ডায়েট যা শরীরে কার্বহাইড্রেটের অনুপস্থিতি তৈরি করে শরীরের ফ্যাট ব্যবহার করে।
কিটো ডায়েটের ভালো ও খারাপ দিক:
অনেকে পুরোপুরি না জেনেই কিটো ডায়েট শুরু করে। এতে করে সমস্যা তৈরি হয়। রোজায় যখন ডায়েট করা হয় তখন শরীর ফ্যাট ভাঙা শুরু করে। তারপর যখন ইফতার করা হয় তখন সেই অবস্থায় থাকে কারণ আপনি ফ্যাট জাতীয় খাবার দিয়েই ইফতার সারছেন। এছাড়া চিনি খাওয়ার বিষয়েও এসময় সতর্ক হতে হবে।
যখন আপনি কার্বোহাইড্রেট খান তখন আপনার ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে যায় এবং আপনার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে গেলে আপনার চিনির প্রয়োজন হয়।
কিটো ডায়েট অনুসরণ করার প্রথম তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে, আপনার কিটো ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার কিটো ডায়েট শরীরকে ডিহাইড্রেট করে তুলতে পারে কারণ ফ্যাটজাতীয় খাবারে এত বেশি পানি থাকে না।
চিকিৎসকের পরামর্শ:
কিটো ডায়েট বছরের পর বছর ধরে বিতর্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক চিকিৎসক রমজানের সময় কিটো ডায়েটের বিরুদ্ধে। কারণ এতে পানিশূণ্যতার ঝুঁকি থাকে। তাদের মতে, ইফতারে অবশ্যই কার্বহাইড্রেট রাখা উচিত। এজন্য অনেকে কিটো ডায়েট করার জন্য শীতকালকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। কারণ ওই সময় শরীরের খুব বেশি পানির দরকার হয় না। তাদের মতে এ সময়টাতে যা খাওয়া হয় আর শরীর যা ব্যয় করে তার মধ্যে ভারসাম্য থাকা উচিত।
এক পুষ্টিবিদ কিটো ডায়েট করে অবিশ্বাস্যভাবে ৩৫ কেজি ওজন কমিয়েছেন। কিন্তু তিনিও রমজানে কিটো ডায়েট না করার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় না রাখলে হিতে বিপরীত হতে পারে। সেই সাথে রমজানে প্রোটিন, কার্ব-হাইড্রেট, ফ্যাট সবরকম খাবার অল্প অল্প করে খেতে হবে। আবার কার্ব-হাইড্রেট, ফ্যাট দুটোই বেশি পরিমাণে খেলে আপনার ওজন বাড়বে।
সবশেষে বলা যায়, কিটো সবার জন্য উপযুক্ত না। এজন্য চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে তারপর এই ডায়েট অনুসরণ করতে হবে।