প্রাচীনকাল থেকে মধু একটি পুষ্টিকর ও সুস্থ শরীরের জন্য অন্যতম উপাদান হিসেবে পরিচিতি পেয়ে আসছে। স্বাস্থ্য গবেষকরা বলেছেন, মধু খাবার অভ্যাসের জন্য জিবে তৃপ্তি জোগানো ছাড়াও মধুর আরও অনেক ভূমিকা আছে। মধু সেবনের ফলে আদিম মানুষের রোগবালাইয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা ছিল বেশি। এ ছাড়া এতে আছে ফেনোলিক্স নামের উপাদান যা অন্যতম শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্টের গুণসম্পন্ন। যখন আমাদের শরীরের অভ্যন্তরে বিপাক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় তখন কিছু কণা নিঃসরণ ঘটে যাদের চিকিৎসাবিদরা সাধারণত ফ্রি রেডিক্যাল বলে অভিহিত করেন। এ ফ্রি রেডিক্যালগুলো নিঃসরণের হার একেকজনের শরীরে একেক রকম। এগুলো শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
আমাদের ধমনির স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা দেওয়া ছাড়া এরা অনেক সময় ডিএনএর ক্ষতিসাধন করতে পারে যা ক্যান্সারসহ অন্যান্য মারাত্মক রোগের জন্ম দিতে পারে। এসব ফ্রি রেডিক্যাল নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ার ক্ষমতা মধুর আছে। ২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে মধু কী প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে ২৫০ জনের ওপর একটি গবেষণা চালান। এদের দুই দলে ভাগ করা হয়।
গবেষণা চলাকালে ২৯ দিন অংশগ্রহণকারী একদলের প্রত্যেককে তাদের স্বাভাবিক খাবারের সঙ্গে চার টেবিল চামচ করে মধু খেতে দেওয়া হয়। অন্যদের কোনো মধু খেতে দেওয়া হয়নি। গবেষণা শুরুর আগে সবার রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। উভয় গ্রুপের রক্তের নমুনা নিয়ে ফেনোলিক্সের মাত্রা পরিমাপ করে দেখা হয়। দেখা যায় মধুগ্রহীতাদের শরীরে এই শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্টের একটি উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটেছে। মার্কিন গবেষকরা তাদের দেশবাসীর উদ্দেশে মাঝেমধ্যে খাবারের সঙ্গে ২ থেকে ৪ চামচ করে মধু খাওয়ার পরামর্শ দেন। তারা বলেন, মধু যত গাঢ় কিংবা কালো হবে এতে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের পরিমাণ তত বেশি। যাদের মিষ্টি খাওয়ার অভ্যাস আছে তারা মধুকে সেসব মিষ্টির স্থলাভিষিক্ত করতে পারেন। তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের যখন তখন মধু খাওয়া নিষেধ। মাঝেমধ্যে ১ অথবা ২ চামচ খেলে ক্ষতি হবে না।