বিদেশগামী যাত্রীদের জন্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষায় র্যাপিড টেস্ট শুরু হয়েছে।
গত বুধবার রাত ১০টা থেকে করোনা পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেম এ এইচ এম তৌহিদ-উল-আহসান।
বিমানবন্দরের পরিচালক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শাহরিয়ার সাজ্জাদ জানান, বুধবার রাতে সৌদিগামী একটি ফ্লাইটের দুইজন যাত্রীর করোনা পরীক্ষার মাধ্যমে বিমানবন্দরে করোনা টেস্টের কার্যক্রম শুরু হয়। পরে দুবাইগামী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটের ৩৯ জন যাত্রীর করোনা পরীক্ষা করা হয়।
গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ-উল আহসান জানান, যাত্রার ৬ ঘণ্টা আগে যাত্রীদের করোনা টেস্ট করে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ফ্লাইটটি আমিরাতের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।বিমানবন্দর এলাকায় একটি মোবাইল ল্যাবে তাদের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। নেগেটিভ রিপোর্ট আসার পর তাদের বোর্ডিং পাস দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুবাইগামী যাত্রী মিরাজ বলেন, ‘আমরা যাত্রার ছয় ঘণ্টা আগে এসেছি। এখানে এসে ১৬০০ টাকা দিয়ে নাম নিবন্ধন করেছি। নমুনা পরীক্ষার তিন ঘণ্টা পর রেজাল্ট দিবে। তারপর নেগেটিভ আসলে আমরা বিমানে উঠতে পারব।’
বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৪টি বিদেশগামী ফ্লাইটে ৫২ জন যাত্রীর করোনা পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তাদের মধ্যে সকাল সোয়া ১০টার দিকে কাতারগামী ফ্লাইটের ৩ জন, দুবাইগামী ফ্লাইটের ১ জন, বিকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে কাতারগামী ফ্লাইটের ৫ জন, ৬টার দিকে দুবাইগামী ফ্লাইটের ৪৩ জনের নমুনা পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
গত বুধবার থেকে ঢাকা থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে পরীক্ষামূলক ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়েছে। ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ৩৯ জন যাত্রী আমিরাতের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের শর্ত অনুযায়ী যাত্রার ৬ ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষা করে নেগেটিভ সনদ নিয়ে বিমানে উঠতে হবে। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে এমন পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় দুবাইয়ে এতদিন কোনো ফ্লাইট চলেনি। এতে বহু প্রবাসী আটকা পড়েছেন।
বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর ল্যাব বসানোর দাবিতে প্রবাসীরা কয়েক দফা কর্মসূচিও পালন করেন।
প্রবাসীদের দাবির মুখে গত ৬ই সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার বৈঠকে সব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর ল্যাব বসানোর নির্দেশ দেন। ওই দিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, দুই-তিন দিনের মধ্যে ল্যাব বসানো হবে।
প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনার দুই সপ্তাহ পরও স্থায়ী ল্যাব বসানো হয়নি। গত ১৫ সেপ্টেম্বর সাতটি প্রতিষ্ঠানকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষার আরটি-পিসিআর ল্যাব বসাতে অনুমোদন দেয় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
এই সাত প্রতিষ্ঠানের প্রোফাইল ও এসওপি সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাঠানো হয়েছে বলে মঙ্গলবার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ জানিয়েছেন।
নির্বাচিত সাতটি প্রতিষ্ঠানের একটি ডিএমএফআর মলিকুলার ল্যাব অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক-এর মোবাইল ল্যাবে বুধবার পরীক্ষামূলকভাবে ৪৬ যাত্রীর নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার প্রক্রিয়াটি তদারকি করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
যেসব যাত্রী করোনার নেগেটিভ সনদ দিয়ে যাত্রা করেছেন তারা দুবাই বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর আবাও করোনা পরীক্ষা করা হবে। সেখানে করোনামুক্ত নিশ্চিত হলেই তাদের সে দেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে।