শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য হলে

0
36
Spread the love

কোষ্ঠকাঠিন্য বলতে আমরা কী বুঝি?

কোনো শিশু যদি সপ্তাহে তিনবারের কম শক্ত, শুষ্ক মলত্যাগ করে। মলত্যাগের সময় যদি অসুবিধা (স্ট্রেনিং) বা পেটব্যথা করে, মলের সাথে যদি রক্ত দেখা যায়, শিশুর প্যান্টে যদি মলের দাগ লেগে থাকে, তবে বুঝবেন তার কোষ্ঠকাঠিন্য হচ্ছে।

সপ্তাহে দুই বার ও যদি কোনো শিশু কষ্ট ছাড়া নরম স্বাভাবিক মলত্যাগ করে, তবে আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য কলব না। শতকরা ১-৩০ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। প্রথম ২-৩ বছর বেশি হয়।

কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ

৯০ থেকে ৯৫ ভাগ ক্ষেত্রে কোনো কারণ ছাড়াই ফাংশনাল কারণে হয়ে থাকে, এর মধ্য অন্যতম কারণ হলো :

১. খাদ্য তালিকা : খাদ্য তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার না খাওয়ানো। ফাস্টফুড ও অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়ানো।
২. শিশুদের পর্যাপ্ত খেলাধুলা ও চলফেরা না করা, দিনের বেশির ভাগ সময় মোবাইল বা টিভি দেখা।
৩. সঠিক টয়লেট প্রশিক্ষণ না থাকা, বাথরুমে সময় না দেওয়া বা বাথরুম চেপে রাখা, অস্বস্তি ও ব্যথার কারণে ভয়ে মল ধরে রাখা।
৪. কিছু ওষুধ সেবন ( আয়রণ ও ক্যালসিয়াম সপ্লিমেন্ট, এন্টিডিপ্রেসেন্টস)।
এছাড়াও কিছু রোগের কারণে শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে যেমন, হাইপোথাইরয়েড, নিউরোলজিক্যাল ডিজিজ, Hirschpng disease, এনাল ফিশার।

কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে জটিলতা

শক্ত মলত্যাগের সময় অতিরিক্ত চাপের কারণে হেমরয়েড, এনাল ফিশার, রেকটাল প্রোলাপস, মল আটকে যাওয়া, অস্বস্তি, মুত্রনালীতে ইনফেকশন, প্রস্রাব আটকে যাওয়া, ফিস্টুলা বিভিন্ন ধরনের জটিলতা হতে পারে।

সমাধানের উপায়

১. শিশুকে মানসিকভাবে সাহায্য করুন। খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা যেমন :- বেল, কলা, আম ও তরলজাতীয় খাবার যেমন :- স্যুপ, লেবু পানি, লাচ্ছি ইত্যাদি খাওয়াবেন।
২. শিশুকে চলাফেরা ও খেলাধুলায় উৎসাহিত করুন।
৩. নিয়মিত টয়লেট ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলুন ও শিশুদের টয়লেট ব্যবহারের ভয় কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করুন।
৪. ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী মল নরম করার ওষুধ ব্যবহার করবেন।
৫. স্কুলে পর্যাপ্ত ব্যবহারযোগ্য টয়লেটের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।
আসুন অভিজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা আপনার শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্যের আসল কারণ নির্ণয় করি ও সমাধানে সচেষ্ট হই।

লেখক : ডা. শামীমা ইয়াসমীন

সহযোগী অধ্যাপক (শিশু), আলোক মাদার এন্ড চাইল্ড কেয়ার, মিরপুর-৬

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে