শিশু অবস্থা থেকেই দাঁত ও মাড়ির যত্ন নেওয়া খুবই প্রয়োজনীয়, তা না হলে দাঁতের সমস্যা একেবারে স্থায়ীভাবে থেকে যেতে পারে। ছোটবেলার যত্ন ও অভ্যাসের ওপর ভিত্তি করেই ভবিষ্যতের দাঁতের স্বাস্থ্য নির্ভরশীল। শিশুর দাঁতের যত্ন নিতে গেলে সর্বপ্রথম তাদের খাওয়াদাওয়ার দিকে নজর দিতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্যান্ডি, চকোলেট, চিপস, কোল্ড ড্রিঙ্কস, আইসক্রিম থেকে শিশুদের দূরে রাখাই ভাল। এছাড়াও, দাঁত ও মাড়ির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে, তা না হলে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে শুরু করবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দাঁত ভাল রাখতে গেলে খাদ্যতালিকায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট দাঁতের সংক্রমণ ও প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করে, মাড়ি এবং দাঁতকে অন্যান্য রোগ থেকে রক্ষা করে। তাই মাড়ি ও দাঁত সুস্থ থাকে। যে কোনও ধরনের বাদাম, বিনস, আঙুর, আপেল, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ।
শিশুর দাঁত ও মাড়ি সুস্থ রাখতে কিছু কিছু খাবার খাদ্যতালিকায় রাখা প্রয়োজন। যেমন-
১. প্রতিটি শিশুর খাদ্যতালিকায় ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার থাকা উচিত। ভিটামিন সি নানাভাবে স্বাস্থ্যের উপকার করে। দাঁত ও মাড়ি সুস্থ রাখে। মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং রক্তপাত হওয়া অর্থাৎ স্কার্ভি প্রতিরোধে সাহায্য করে ভিটামিন সি। স্ট্রবেরি, কমলালেবু এবং ব্রকোলি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। এগুলি শিশুকে খাওয়াতে পারেন।
২.ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার হাড় ও দাঁতের জন্য ক্যালসিয়াম কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা সবারই জানা। তাই, শিশুদের খাদ্যতালিকায় ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারও রাখতে হবে। বিশেষ করে, পালং শাক দাঁতের এনামেল ভেঙে যাওয়া রোধ করতে সাহায্য করে। এনামেল ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস দ্বারা গঠিত এবং এই দু’টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার এনামেল ক্ষয় থেকে রক্ষা করে।
৩.শিশুকে সুষম খাদ্য খাওয়ান। সুষম খাদ্য কেবল শিশুর দাঁতই ভাল রাখে না, পাশাপাশি সামগ্রিক স্বাস্থ্যও ভাল রাখে। তাই শিশুর খাদ্যতালিকায় তাজা ফলমূল ও শাকসবজি থেকে শুরু করে দুগ্ধজাত খাবার এবং ডিম, চর্বিহীন মাংস, মাছ, সালাদ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করুন।
৪. শিশু যেন সারা দিনে যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করে, সেদিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখুন। পানি দাঁত ও মাড়িতে লেগে থাকা খাদ্যকণা সরিয়ে দেয়, মাড়িকে শুকনো হতে দেয় না এবং এনামেলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। পানিতে ফ্লোরাইড নামক একটি খনিজ থাকে, যা দাঁত ভেঙে যেতে দেয় না। তাছাড়া পানি কেবল দাঁত-মাড়ি ভাল রাখে না, পাশাপাশি সামগ্রিক স্বাস্থ্যও ভাল রাখে।