স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে মানুষের মধ্যে যত উদাসীনতা বাড়ছে, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ তত দ্রুতগতিতে উঠে যাচ্ছে চূড়ার দিকে। বিশেষজ্ঞরা আগে থেকেই আশঙ্কা করছিলেন এই দফায় গত এপ্রিলের পরিস্থিতিও ছাপিয়ে যেতে পারে। গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী যেন সেই আশঙ্কা আরো জোরালো হচ্ছে। এ জন্য মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত পূববতীঁ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছে পাঁচ হাজার ৭২৭ জন এবং মারা গেছে ৮৫ জন। এর আগে গত ২৯ এপ্রিলের হিসাবে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছিল ৮৮ জনের এবং ১৩ এপ্রিল শনাক্ত হয়েছিল ছয় হাজার ২৮ জন। মাঝের দিনগুলোতে মৃত্যু ও শনাক্ত ছিল এর চেয়ে কম। সেই হিসাবে গতকাল মৃত্যু ছিল ৫৫ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ এবং শনাক্ত ছিল ৭১ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ।
অন্যদিকে দেশে জাতীয় হিসাবে দৈনিক শনাক্ত আবার ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে উঠে গেছে ২০.২৭ শতাংশে। অন্যদিকে গতকাল দেশে মারা যাওয়া ৮৫ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৬ জনই খুলনা বিভাগের। এর পরই ১৮ জন রাজশাহীর ও ১৯ জন ঢাকা বিভাগের। অন্যদিকে শনাক্ত হিসাবে গতকাল সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ ছিল চুয়াডাঙ্গায়। অন্যদিকে আগের তুলনায় ঢাকায়ও গতকাল শনাক্ত হার বেড়ে ১৬ শতাংশে উঠে গেছে।
নিয়মিত বুলেটিনে গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন মানুষকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি সংক্রমণ রোধে সরকারি উদ্যোগকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে চলমান লকডাউন বা বিধি-নিষেধ কার্যকরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকেও কঠোর হওয়ার অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, লকডাউন ও বিধি-নিষেধ কঠোরভাবে মেনে চলা গেলে সংক্রমণ কমিয়ে আনা যাবে। এ জন্য জনগণকেও সহযোগিতা করা দরকার আর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজনে আরো কঠোর হতে হতে হবে। লকডাউনে মানুষের সাময়িক ভোগান্তি হলেও সংক্রমণ পরিস্থিতি মোকাবেলা করা, হাসপাতালের প্রস্তুতি এবং মৃত্যু কমিয়ে আনার জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টার হিসাবে মৃত ৮৫ জনের মধ্যে ৫৫ জন পুরুষ ও ৩০ জন নারী। যাঁদের বয়স ৩১-৪০ বছরের মধ্যে ১০ জন, ৪১-৫০ বছরের ১১ জন, ৫১-৬০ বছরের ১৮ জন ও ষাটোর্ধ্ব ৪৬ জন রয়েছেন।