সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ দুই বছর

0
890
Spread the love

মা শিশুকল্যাণ কেন্দ্র

ঝালকাঠির মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে দুই বছর ধরে সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ রয়েছে। ফলে সরকারি ডাক্তারদের পরামর্শে তাদের পছন্দমতো স্থানীয় বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে গর্ভবতী মায়েদের সিজারের জন্য আন-অফিসিয়ালি রেফার্ড করেন। অনেকে ঝালকাঠি ও বরিশাল বিভাগীয় সদরের বিভিন্ন ক্লিনিকে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে অসহায় রোগীদের বাড়তি খরচ বহন করতে হচ্ছে। সিজার ও পরবর্তী  সময়ের জন্য সেবার অর্থের উৎস নিয়ে হিমশিম খেতে হয় তাদের। বরিশালে নেওয়ার পথেই অনেক প্রসূতির মৃত্যুঝুঁকিও থাকে। অত্যাধুনিক চিকিৎসা সামগ্রী ও উন্নত পরিবেশ থাকার পরও প্রায় দুই বছর এনেসথেসিয়া চিকিৎসক না থাকায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।  জানা যায়, প্রায় ৮ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত জেলা ঝালকাঠি। এখানেই অবস্থিত ২০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র। এ কেন্দ্রে প্রায় দুই বছর ধরে এনেসথেসিয়া চিকিৎসক নেই। দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ রয়েছে এখানকার অপারেশন থিয়েটার।

ফলে গর্ভবতী মায়েদের প্রয়োজনে এখানে সিজারিয়ান অপারেশন হচ্ছে না। এ ধরনের রোগীদের বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক অথবা বিভাগীয় শহর বরিশালে নিয়ে যেতে হয়। এতে একদিকে যেমন মোটা অংকের অর্থের প্রয়োজন। অন্যদিকে মা ও গর্ভস্থশিশুর সুস্থ থাকা নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। তা ছাড়া দরিদ্রদের পক্ষে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা জোগাড় করে অন্যত্র সেবা নেওয়া দুঃসাধ্য। এখানকার এনেসথেসিয়া চিকিৎসক ডা. মো. আমির হোসাইন প্রায় দুই বছর আগে উচ্চতর প্রশিক্ষণে যাওয়ার পর থেকেই এ পদটি শূন্য রয়েছে। পরে ডা. আমির হোসেন বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার হয়ে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন। তার পরিবর্তে কোনো ডাক্তারকে পদায়ন করা হয়নি দুই বছরেও। অভিযোগ রয়েছে, ব্যবসায়িক স্বার্থে ক্লিনিক মালিকদের সঙ্গে যোগসাজশে চিকিৎসা কর্তৃপক্ষ এনেসথেসিয়া চিকিৎসক পদায়ন করাতে বিলম্ব করছে। এতে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন চিকিৎসা নিতে আসা স্বল্প আয়ের মানুষ। এ কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা একাধিক নারী ও রোগীর স্বজনরা জানান, গত আট মাস এখানকার চিকিৎসক মো. জোয়াহের আলীর কাছে প্রসব পূর্ববর্তী সব চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা। তবে স্বল্প খরচে এ কেন্দ্রে ডেলিভারির কাজ করানোর ইচ্ছা থাকলেও এনেসথেসিয়া চিকিৎসক না থাকায় অনেক টাকা খরচ করে বেসরকারি অনুমোধনহীন ক্লিনিকে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এ বিষয়ে ঝালকাঠি মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে কর্মরত চিকিৎসক ডা. মো. জোয়াহের আলী জানান, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও শুধু এনেসথেসিয়া চিকিৎসকের অভাবে এখানে সিজারিয়ান সেকশন বন্ধ রয়েছে। তবে এখানে রোগী দেখা ও নরমল ডেলিভারির কাজ নিয়মিতই হচ্ছে। ঝালকাঠি পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. কামাল হোসেন জানান, এনেসথেসিয়া চিকিৎসক না থাকায় অনেক দিন সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ আছে। সদর হাসপালের এনেসথেসিয়া ডাক্তার দিয়ে বর্তমান সংকট নিরসনের চেষ্টা চলছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে