‘সুপার ফুড’ সজনে পাতা থেকে দূরে থাকবেন যারা

0
6
Spread the love

বাংলাদেশের বেশ জনপ্রিয় একটি সবজি হচ্ছে সজনে পাতা। এই সবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান। এমনকি বৈশ্বিকভাবেই এই সজনে পাতা ‘সুপার ফুড’ হিসেবে পরিচিত। পুষ্টি, ঔষধিগুণ ও সারা বছর ফলন পাওয়া যায় বলে বাড়ির আঙিনায় জন্মানো এই গাছকে ‘মাল্টিভিটামিন বৃক্ষ’ও বলা হয়।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বলা হয়, সবজিকে যদি সুপারহিরোদের সঙ্গে কল্পনা করা হতো, তাহলে সজনে হতো ‘আয়রন ম্যান’।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য মতে সজনের উৎপত্তিস্থল দক্ষিণ এশিয়া। শীত প্রধান দেশ ছাড়া প্রায় সারা পৃথিবীতেই এটি জন্মে। বিশেষ করে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে এর চাষ হয়।

সারাবিশ্বে ১৩ প্রজাতির সজনে পাওয়া যায়। এসব অঞ্চলে প্রদাহ থেকে শুরু করে গনোরিয়া কিংবা ম্যালেরিয়ার মতো রোগের প্রচলিত চিকিৎসায় সজিনা ব্যবহৃত হয়।

সজনের পাতা, শিকড় ও অপরিণত শুঁটি সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। এ ছাড়া এই গাছের বাকল, শুঁটি, পাতা, বাদাম, বীজ, কন্দ, শিকড় ও ফুলসহ গোটা অংশই খাওয়া যায়।

একাধিক বৈজ্ঞানিক গবেষণার ভিত্তিতে সজিনায় প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি ও ঔষধি গুণ আছে বলে জানান পুষ্টিবিদরা।

সবজির চেয়ে এর পাতার গুণাগুণ আরো বেশি। সজিনা পাতায় নয় ধরনের অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো এসিডসহ ৩৮% আমিষ বিদ্যমান। এ ছাড়া এতে আছে আয়রন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন এ, বি ও সি। সজনের বীজে থাকে প্রোটিন ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড।

এতো কিছুর পরও এই সজনের রয়েছে কিছু অপকারিতা। কিছু মানুষের জন্য এই সবজি খাওয়া নিষেধ করা হয়েছে। কী সেই কারণ, চলুন জেনে নিই।

সজনের অপকারিতা

সজিনা পাতায় অনেক বেশি পরিমাণে পুষ্টিগুণ ও ঔষধিগুণ থাকলেও বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকরও হতে পারে। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনে প্রকাশিত প্রবন্ধে এর কয়েকটি ঝুঁকির দিক উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হলো—

গর্ভবতী নারীদের জন্য: সজিনার পাতা প্রতিদিনের আয়রন ও ক্যালসিয়ামের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট। তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি প্রজননরোধীও হতে পারে।

থাইরয়েড চিকিৎসায়: সজিনা থাইরয়েডের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করলেও থাইরয়েডের চিকিৎসার সময় অন্য কোনো ওষুধের সঙ্গে মেশালে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে: সজিনা পাতা রক্তে শর্করা কমিয়ে দেয়। কিছু ক্ষেত্রে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা খুবই কমিয়ে দিতে পারে।

রক্তচাপের ওষুধের জন্য: রক্তচাপ কমাতে সজনে ব্যবহৃত হয়। তবে রক্তচাপ কমানোর ওষুধের সঙ্গে এটি খেলে তা রক্তচাপ অতিরিক্ত কমিয়ে দিতে পারে।

এ ছাড়া যাদের কিডনিতে সমস্যা আছে তাদের সজিনা না খাওয়াই ভালো বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। কারণ, কিডনি রোগীদের পটাসিয়াম ফসফরাস ও প্রোটিন রেস্ট্রিক্টেড করা হয়। অন্যদিকে সজনে পাতায় অনেক পটাসিয়াম ফসফরাস ও প্রোটিন থাকে। তবে সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের কিডনি সুরক্ষায় সজনে বেশ উপকারী।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে