যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডারস অ্যান্ড স্ট্রোক (এনআইএনডিএস) অনুসারে, স্টিফ পারসন সিনড্রোম একটি বিরল স্নায়বিক ব্যাধি।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের মতে, এটি এমন একটি রোগ, যা শরীরের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাধারণত কাঁধের পেশি শক্ত হয়ে যায়। পা এবং শরীরের অন্যান্য অংশের পেশিও শক্ত এবং অনমনীয় হতে দেখা যায়।
রোগীর এই অবস্থাটা খুবই বেদনাদায়ক। কারণ এর ফলে পেশিতে খিঁচুনি হয়। অনেক কারণেই খিঁচুনি হতে পারে। যেমন মানসিক কষ্ট, যেকোনো ধরনের শব্দ শুনে, এমনকি কেউ হালকাভাবে ছুঁয়ে দিলেও শুরু হতে পারে খিঁচুনি।
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক আরো জানায়, স্টিফ পারসন সিনড্রোমের কারণে চলাফেরার ভঙ্গি পরিবর্তন হতে পারে এবং গুরুতর ক্ষেত্রে হাঁটা বা নড়াচড়া করার ক্ষমতা কমে যায়।
এই রোগটি খুবই বিরল। প্রতি এক মিলিয়নের মধ্যে একজনের হয়। তবে পুরুষদের তুলনায় নারীরা এই রোগে আক্রান্ত হয় বেশি। এটি এতটাই বিরল রোগ, অনেক স্নায়ু বিশেষজ্ঞ হয়তো এটি কখনোই দেখতে পাবেন না।
লক্ষণ
এই রোগের লক্ষণগুলো সাধারণত ৩০ থেকে ৬০ বছর বয়সের মধ্যে বিকাশ লাভ করে। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল মেডিসিন অনুসারে নিচের লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে পারে।
** ঘাড় এবং অন্যান্য অঙ্গের পেশি শক্ত হয়ে যাওয়া।
** মারাত্মক পেশির খিঁচুনি। এটা এতটাই গুরুতর হতে পারে যে খিঁচুনি হয়ে মাটিতে পড়েও যেতে পারেন।
** হাঁটতে অসুবিধা হওয়া।
** বিষণ্ণতা
** উদ্বেগ
রোগ নির্ণয়
স্টিফ পারসন সিনড্রোম অনেকে পারকিনসন রোগ, মাল্টিপল স্কলেরোসিস, ফাইব্রোমায়ালজিয়া, সাইকোসোমাটিক অসুস্থতা এবং ফোবিয়া মনে করে ভুল করে ফেলে বলে জানায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডারস অ্যান্ড স্ট্রোক।
মেরুদণ্ডের আঘাতে এমনটা হয়েছে বলেও ভুল হতে পারে। এই রোগ নির্ধারণে বিভ্রান্তি হতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউরোলজির মেডিক্যাল ডিরেক্টর এবং মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির পেশি ডিস্ট্রোফি ক্লিনিকের পরিচালক অমিত সচদেব।
রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এই রোগ নির্ণয় করা হয়। রক্তে গ্লুটামিক এসিড ডিকারবক্সিলেস (জিএডি) অ্যান্টিবডির মাত্রা পরিমাপ করা হয়। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির জিএডি-এর মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে। জিএডি একটি অ্যান্টিবডি, যা মস্তিষ্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিউরোট্রান্সমিটারের বিরুদ্ধে কাজ করে।
সূত্র : প্রিভেনসন ডটকম