স্তন ক্যান্সারের উপসর্গ, কারা ঝুঁকিতে

0
321
doctor explaining diagnosis to her female patient
Spread the love

নারীদের স্তন ক্যান্সার একটি জটিল সমস্যা।  আবহাওয়া, খাদ্যাভ্যাস ও জীবন-যাত্রার পরিবর্তনের কারণে এই রোগের প্রকোপ বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৫ হাজারের বেশি মানুষ স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে।

স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি ও উপসর্গ নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বক্ষব্যাধি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রফিক আহমেদ।

নিম্নে উল্লেখিত নারীদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি-

* যারা নিয়মিত স্ক্রিনিং করান না।

* বয়স ৪০ বছরের বেশি হলে কোনো উপসর্গ ছাড়াই চিকিৎসকের পরামর্শে ছয় থেকে বারো মাস অন্তর সব নারীকে ম্যামোগ্রাম করাতে হবে। রুটিন পরীক্ষা তো করাতেই হবে।

* ১২ বছরের আগে যদি ঋতুস্রাব শুরু হয়।

* কারও ঋতুস্রাব যদি ৫৫ বছরের পরও চলতে থাকে।

* পারিবারিক ইতিহাস অর্থাৎ মা, খালা, বোন, রক্তের সম্পর্ক যুক্ত। পরিবারের একজনের ক্যান্সার হলে অন্যদের মধ্যে ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা বেশি লক্ষ করা যায়।

* প্রথম সন্তান যদি ৩৫ বছরের পর হয়। স্তনে অন্য কোনো রোগ হয়।

* যাদের সন্তান হয় না অর্থাৎ বন্ধ্যা।

* যাদের উচ্চতা ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি।

উপসর্গ

অনেক নারী যাদের বয়স ১৫-৩৫ বছর, বুকের স্তনে বা দুই দিকেই মার্বেলের মতো গোল গোল এক বা একাধিক চাকা অর্থাৎ মাংস দলা থাকতে পারে- যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। এদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মসৃণ, রাবারের মতো, মার্জিন সহজে বোঝা যায়, নড়াচড়া করে ব্যথা থাকে না।

১৫-৪৫ বছর বয়সী মহিলাদের ১ থেকে ২ সেন্টিমিটার আকৃতির হতে পারে আবার অর্ধ সেন্টিমিটারও হতে পারে। কেন হয় কারণ জানা যায়নি। এটিকে বলা হয় বেনাইন অর্থাৎ শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়।

স্তন ক্যান্সারের সতর্ক সংকেত- যখন চিকিৎসকের কাছে অতি শিগগির যাবেন

* বুকের মধ্যে শক্ত চাকা, ঘন পুরো বা অমসৃণ, একই স্থানে থাকে।

* স্তন ফুলে গেলে গরম অনুভব হলে, লাল হয়ে গেলে অথবা ত্বক কালো হয়ে গেলে।

* স্তনের আকার, আকৃতি যদি দ্রুত পরিবর্তন হতে থাকে।

* স্তনের ত্বকে যদি গর্ত হয় বা কুঁচকে যায়।

* নিপল যদি বেশি চুলকায়, র‌্যাশ হয়, ঘা হয়।

* নিপল যদি হঠাৎ করে ফুলে যায় বা অংশ বিশেষ ফুলে যায়।

* হঠাৎ করেই নিপল দিয়ে রক্ত বা সাদা, যে কোনো তরল জাতীয় আঠালো পদার্থ নিঃসরণ হতে শুরু করে।

* হঠাৎ করেই স্তনের মধ্যে ব্যথা শুরু হয়েছে- তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।

এমনটি হলে- তখন আর দেরি নয়, দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাবেন।

কী করবেন 

* ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

* কায়িক ও শারীরিক পরিশ্রম করুন। প্রতি দিন ঘাম ঝড়িয়ে ৩০-৪৫ মিনিট ব্যায়াম করুন।

* প্রতিদিন ৪ ধরনের ফল ও সবজি খেতে হবে।

* ধূমপান, মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন।

* জন্ম বিরতিকরণ পিল সেবন থেকে বিরত থাকুন। বিশেষ করে যাদের বয়স ৩৫ বছর পার হয়েছে।

* ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার পর অনেকেই হরমোন থেরাপি গ্রহণ করেন- সেটি থেকে বিরত থাকুন।

* দুগ্ধবতী মায়েরা অবশ্যই বাচ্চাকে ৬ মাস পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ পান করাবেন। কমপক্ষে ২ বছর বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়াবেন।

* ওষুধে রোগ সারায় আবার ওষুধেই স্তন ক্যান্সার হয়। যদি কেউ টেমক্সিফেন অথবা রেলক্সিফেন ওষুধ দীর্ঘদিন সেবন করেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে