২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে দেশজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। গত অর্থবছরে করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি মাকাবেলার কথা বিবেচনা করে বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা হয়। চলতি বছর এ বরাদ্দের পরিমাণ আরও বাড়ানো হয়। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক দাবি করেছেন, স্বাস্থ্য সেবার যে কলেবর বা পরিধি বেড়েছে তাদে বরাদ্দ আরও একটু বাড়ালে ভালো হবে। সবগুলো হাসপাতালের বেড সংখ্যা এখন দ্বিগুণ, কোথাও তিনগুণও বেড়েছে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে বরাদ্দের প্রয়োজন।
রবিবার জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) নবনির্মিত আইসিইউ উদ্বোধন ও হাসপাতালের সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এবারের বাজেটকে জনবান্ধব বাজেট উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ওপর ট্যাক্স বসানো হয়নি। দরিদ্র মানুষ কষ্ট পাবে এমন কোনো কিছুর ওপর ট্যাক্স বসানো হয়নি। বিভিন্ন ভাতা বাড়ানো হয়েছে। ওষুধের কাঁচামালে ট্যাক্স প্রত্যাহার করা হয়েছে, ওষুধের দাম কমানো হয়েছে। নি¤œ মানের সিগারেট, তামাক, গুল ও জর্দায় ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে। আশা করি এর ফলে ধূমপায়ীদের সংখ্যা কিছুটা হলেও কমবে।
এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর পরিবেশ উন্নয়নের তাগিদ দিয়ে বলেন, আমরা চাই সরকারি হাসপাতালগুলো এতো উন্নত হোক যে বেসরকারি হাসপাতালগুলো সেসব দেখে শিক্ষা নিক। আমরা চাই না কোনো রোগী বিদেশ যাক। মন্ত্রী বলেন, সাধারণত বেসরকারি হাসপাতালগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিক দিয়ে অনেক উন্নত। আমরা চাই সরকারি হাসপাতালগুলো পরিষ্কারের দিক দিয়েও আরও উন্নত হোক। আমাদের অনেক ভালো হাসপাতাল রয়েছে।
নিটোরে ২০টি আইসিইউ বেড উদ্বোধনের মাধ্যমে হাসপাতালটির সেবার মান আরও উন্নত হয়েছে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, এটি দেশের খুব গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল। এখানে সারা দেশ থেকে হাজার হাজার রোগী আসে। সারাদেশে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে, গত পাঁচ মাসে ৩২ হাজার রোগীকে এখানে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। গত বছর তিন লাখ ৬০ হাজার রোগীকে সেবা দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে অপারেশন করা হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার। সব ধরনের আধুনিক যন্ত্রপাতি দরকার এখানে রয়েছে। তবে এখানে ভালো আইসিইউ ছিল না, এখন হলো। যার মাধ্যমে চিকিৎসার মান আরও বৃদ্ধি পেল।
মন্ত্রী বলেন, সারাদেশে ২০০ এ রকম আইসিইউ ছিল। কোভিডের সময় থেকে গত তিন বছরে সারাদেশে এখন এক হাজার ৫০০টি আইসিইউ রয়েছে। প্রতিটি হাসপাতালে এখন আধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে। করোনার সময় দেখলাম, কোনো হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা নেই। এখন ১১০টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা আছে।
তিনি বলেন, নিটোরে প্রায় ৩৬০ জন ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার ১০০ জন কর্মরত রয়েছেন। তবে কিছু পদ ফাঁকা আছে। সেই পদগুলো পূরণ করার জন্য সব ধরনের সাহায্য আমরা করে দিব। আমি চাই হাসপাতালটি মডেল হিসেবে কাজ করুক। লোক বেশি হলেই কাজ ভালো হবে তা না, ডেডিকেটেড-কমিটেড লোক থাকতে হবে। যে বিভাগে চিকিৎসক নাই, সেই বিভাগেও চিকিৎসক দেওয়ার ব্যবস্থা করব।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, নিটোর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল গনি মোল্লা।