জাতীয় স্বাস্থ্য সেবার কল সেন্টার ‘স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩’-এ যুক্ত হতে যাচ্ছে নতুন আরো তিন স্বাস্থ্যসেবা। এগুলো হলো যৌন স্বাস্থ্য, প্রজনন স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা সেবা। সোমবার এক প্রেস বিজ্ঞতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞতিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য বাতায়নের ডাক্তারদের যৌন স্বাস্থ্য, প্রজনন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা সম্পর্কে আরো দক্ষ করে তুলতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, আন্তর্জাতিক সংগঠন আইপাস বাংলাদেশ এবং দেশের প্রথম সারির আইসিটি ও সর্ববৃহৎ ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সিনেসিস আইটির সমন্বয়ে তিনদিনব্যাপী প্রশিক্ষণে ৯০ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
এই প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মা ও শিশুসেবা, লাইন ডিরেক্টর (এমসি-আরএএইচ) ডা. মোহাম্মাদ শরীফ, এমআইএস ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ই-হেলথ বিভাগের পরিচালক ডা. হাবিবুর রাহমান। আরও উপস্থিত ছিলেন আইপাস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডাক্তার সৈয়দ রুবাইয়াত, সিনেসিস আইটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহরাব আহমেদ চৌধুরী এবং সিনেসিস হেলথ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস ও ই-হেলথ বিভাগের পরিচালক ডা. হাবিবুর রাহমান বলেন, স্বাস্থ্য বাতায়ন দেশের জনগণকে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। সিনেসিস আইটির পরিচালনায় এটি এখন আর কল সেন্টারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, স্বাস্থ্য বাতায়ন এখন স্বাস্থ্যসেবার ডিজিটাল হাসপাতাল হিসেবে কাজ করছে। করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্য বাতায়নের বেশ অগ্রগতি হয়েছে।
এই প্রকল্পটির মাধ্যমে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর এবং আইপাস বাংলাদেশের সাথে কাজ শুরু করলো সিনেসিস আইটি’র সিনেসিস হেল্থ বিভাগ। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ৯০ জন ডাক্তার ৩ দিনে সকাল ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবেন। ডা. মোহাম্মাদ আবুল খায়ের, সিনিয়র উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য সেবা, আইপাস বাংলাদেশ এবং ডা. সায়েদা খাদিজা আক্তার, উপদেষ্টা, আইপাস বাংলাদেশ এই প্রশিক্ষণ প্রদান করবেন।
সিনেসিস হেলথ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. নিজামউদ্দিন আহমেদ জানান, বাংলাদেশ সরকারের অধীনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে গত ২০১৫ সাল থেকে স্বাস্থ্য বাতায়ন দেশের জনগণকে নিরলসভাবে সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। ২০১৭ সালের পর থেকে এই সেবার বেশ উন্নয়ন করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে সেবাগুলো উন্নীতকরণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি, তারই ধারাবাহিকতায় আজ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সাথে আমরা যুক্ত হতে পেরে বেশ আনন্দিত। এই প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম ভবিষ্যতের পরিবার পরিকল্পনায় আরও বেশি যুগ উপযোগী স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের অনুপ্রেরণা যোগাবে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান-আরা বানু বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেকেই পরিবার পরিকল্পনা বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না। আমার বিশ্বাস স্বাস্থ্য বাতায়নের মাধ্যমে দেশের জনগণকে প্রজনন স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে সচেতন এবং পরামর্শ প্রদান স্বাস্থ্য সেবায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আইপাস বাংলাদেশের (Ipas, Bangladesh) কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. সৈয়দ রুবাইয়াত জানান, আইপাস বাংলাদেশ যৌন স্বাস্থ্য এবং প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে বহু বছর ধরে কাজ করে আসছে, আমরা আশা করছি এই উদ্যোগ আমাদের সেই প্রচেষ্টাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এছাড়াও মা ও শিশু সেবা, লাইন ডিরেক্টর (এমসি-আরএএইচ), পরিচালক ডা. মোহাম্মাদ শরীফ বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষজন স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ে অজ্ঞ, এক্ষেত্রে যৌন এবং প্রজনন বিষয়ের পাশাপাশি পুষ্টি ও স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞের সেবা গ্রহণের ব্যবস্থা থাকলে দেশ ও জনগণের অনেক উপকারে আসবে।
সিনেসিস আইটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহরাব আহমেদ চৌধুরী। তিনি জানান, সিনেসিস আইটি স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজ করে যাচ্ছে দীর্ঘ ১৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে। এই পথচলায় প্রায় ১৫০ এরও অধিক সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সকল ডিজিটাল সেবা নিয়ে কাজ করেছে। আমি অত্যন্ত আনন্দের সাথে বলতে চাই; ই-গভার্নেন্স ও কল সেন্টার সেবার পাশাপাশি সিনেসিস আইটি আজ দেশের সর্ববৃহৎ ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান।