পাওয়া গেল চিকিৎসক দালালের তালিকা
রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুরে চলছে স্যাম্পল ওষুধের রমরমা ব্যবসা। অথচ উৎপাদনকারী কোম্পানির পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের বিনামূল্যে দেওয়া এসব ওষুধ ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ। কিন্তু চিকিৎসকরা টাকার বিনিময়ে এসব ওষুধ ফার্মেসিতে বিক্রি করে দেন। ফার্মেসি থেকে সেগুলো ক্রেতাদের কাছে বিক্রিও করা হয়। দীর্ঘদিন ধরেই নগরীতে স্যাম্পল ওষুধের কেনাবেচা চলে আসছে। মঙ্গলবার রাতে লক্ষ্মীপুর মোড়ের এমন তিনটি ফার্মেসিতে অভিযান চালিয়েছে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ। ফার্মেসি তিনটিতে ডিবি পুলিশ অন্তত ৩০ লাখ টাকা মূল্যের স্যাম্পল ওষুধ খুঁজে পায়। একটি ফার্মেসিতে ৮০ জন চিকিৎসক ও দালালের নামের তালিকাও পাওয়া গেছে- যারা এসব ওষুধ ফার্মেসিতে সরবরাহ করেন। ফার্মেসি তিনটি হলো-আনোয়ারা ফার্মেসি, বিসমিল্লাহ ফার্মেসি এবং মা-বাবা ফার্মেসি। স্যাম্পল ওষুধ ক্রয়-বিক্রয়ের অপরাধে অভিযান শেষে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর আনোয়ারা ফার্মেসিকে ২৫ হাজার টাকা এবং অন্য দুটিকে ১৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করে।
তবে কাউকে আটক করা হয়নি, ওষুধও জব্দ করা হয়নি। তবে ফার্মেসি মালিকরা যেসব স্থান থেকে ওষুধগুলো এনেছিলেন, সেখানেই ফেরত দিতে হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এই তালিকায় রাজশাহীর খ্যাতনামা অনেক চিকিৎসকের নাম রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এখন থেকে তাদের গোয়েন্দা নজরদারি করা হবে। যেসব দালালের নাম এসেছে তাদেরও নজরদারিতে রাখা হবে। আর এখন থেকে নিয়মিতই স্যাম্পল ওষুধের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।
আনোয়ারা ফার্মেসির মালিক আহসান হাবিব নাজমুল বলেন, চিকিৎসকরা ফোন করে তাদের বাসায় অথবা চেম্বারে ডেকে নেন। এরপর তাদের এসব ওষুধ দেওয়া হয়। আর দালালরা নিজেরাই চিকিৎসকের কাছ থেকে ওষুধ এনে দেন। তারা ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ দামে ওষুধগুলো কেনেন।
রাজশাহী নগর ডিবি পুলিশের উপ-কমিশনার আবু আহম্মাদ আল মামুন বলেন, ফিজিশিয়ান স্যাম্পল ওষুধ ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ। ওষুধ কোম্পানিগুলো চিকিৎসকদের এগুলো দেন রোগীদের বিনামূল্যে দেওয়ার জন্য। এসব ওষুধের প্যাকেটেই লেখা থাকে- ‘এগুলো স্যাম্পল। ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ।’ কিন্তু অনেক চিকিৎসক এগুলো ফার্মেসিতে বিক্রি করে দেন।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হাসান আল-মারুফ জানান, স্যাম্পল ওষুধ ক্রয়-বিক্রয়ের অপরাধে ভোক্তা অধিকার আইনে তিনটি ফার্মেসিকে ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। কাউকে আটক করা হয়নি।