হজ চলাকালে অনেক ক্ষেত্রে রুটিন বদলে যায়। দৈনন্দিন পরিশ্রম, খাদ্য গ্রহণ, খাদ্যের মেনু, ভৌগোলিক পরিবেশ, আবহাওয়া সব কিছুই বদলে যায়। এগুলো রক্তে গ্লুকোজের মাত্রার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এ কারণে ডায়াবেটিক রোগীদের এই সময় জটিলতা অনেক বেড়ে যায়।
♦ হাইপোগ্লাইসেমিয়া ♦ পানিশূন্যতা ♦ পায়ে ক্ষত সৃষ্টি বা প্রদাহ ♦ ডায়াবেটিক কিটো এসিডোসিস ♦ হাইপার গ্লাইসেমিক হাইপার অসমোলার স্টেট ♦ হিট স্ট্রোক ♦ অন্যান্য ইনফেকশন ♦ ডায়রিয়া ♦ হৃদরোগ ইত্যাদি।
প্রস্তুতি নিন আগেই
♦ হজে যাওয়ার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসুন।
♦ ডায়াবেটিসসংক্রান্ত অন্যান্য জটিলতা থাকলে চিকিৎসা নিন। পায়ে ক্ষত থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
♦ ইনসুলিন সংরক্ষণের জন্য ঠাণ্ডা প্যাকের ব্যবস্থা করুন।
♦ নিয়মিত ডায়াবেটিস পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সঙ্গে নিন। এগুলো অত্যধিক তাপে নষ্ট হয়ে যায়।
♦ ব্যবস্থাপত্র সঙ্গে রাখুন। চিকিৎসককে বলে ওষুধের জেনেরিক নাম লিখে নিন।
♦ ডায়াবেটিসের জন্য ইমারজেন্সি কিট সঙ্গে নিন।
♦ হাঁটার জন্য জুতসই জুতা সঙ্গে নিন।
ইনসুলিন সংরক্ষণে করণীয় : মূল লাগেজে রাখলে ইনসুলিন নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সে জন্য হাতের লাগেজে আপনার ইনসুলিন রাখুন। বিমানে উঠে এটি বিমানবালাকে দিয়ে দিন। যাতে তিনি সংরক্ষণ করতে পারেন। সৌদি আরবে গিয়ে এটি ফ্রিজে রাখুন। যখন বাইরে বের হবেন তখন একটা বিশেষ ধরনের ঠাণ্ডা ওয়ালেটের ভেতরে রাখুন। এগুলো যাতে রোদের সংস্পর্শে না আসে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। এমনকি রক্ত পরখ করার স্ট্রিপগুলো যাতে সরাসরি রোদের সংস্পর্শে না আসে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
বিপদ চিহ্ন দেখলে সতর্ক হন : অত্যধিক ঘাম, বুক ধড়পড়, মাথা ব্যথা, ক্ষুধা, অস্থিরতা দেখা দিলে এগুলো রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যাওয়া নির্দেশ করে। এমনটি দেখা দিলে কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ পানীয়, দুধ, ফলের রস অথবা চিনির শরবত পান করতে হবে।
পায়ের যত্ন নেওয়া জরুরি : ডায়াবেটিক রোগীদের হজের সময় পায়ে ক্ষত হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়। এ জন্য নিয়মিত পায়ের যত্ন নিতে হবে। পায়ের আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য নিয়মিত পায়ে লোশন অথবা ভ্যাসলিন ব্যবহার করতে হবে। পায়ে ফোসকা পড়ে গেলে, ক্ষত সৃষ্টি হলে কিংবা ইনফেকশন দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
পরামর্শ দিয়েছেন
লে. কর্নেল ডা. নাসির উদ্দিন আহমদ
মেডিসিন স্পেশালিস্ট, এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট
সিএমএইচ, বরিশাল।