অতিসত্বর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিওথেরাপি ভবন নির্মাণ, সরকারি প্রতিষ্ঠানের ইন্টার্ন ফিজিওথেরাপিস্টদের জন্য মাসিক ইন্টার্ন ভাতা চালু করা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইন্টার্ন ভাতা প্রদান বাধ্যতামূলক করাসহ সাত দফা দাবিতে মহাখালীস্থ স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের ডিজির দফতরের সামনে বুধবার মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (বাপসু)।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বাপসু’র আহ্বায়ক নুজাইম খান প্রান্ত, ইন্টার্ন ফিজিও চিকিৎসকদের পক্ষে ডা. শান্তনু বাড়ৈ, বাপসু’র প্রচার সম্পাদক সালাউদ্দিন মুন।
নেতারা জানান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ডিজি ২টি (৩ ও ৬ নম্বর) দাবি নিয়ে কাজ করার আশ্বাস দেন। স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের ডিজির সাথে কথা বলার কথা বলেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বাপসু গত রোববার স্বাস্থ্য শিক্ষা ডিজির সাথে দেখা করে স্মারকলিপি জমা দেয়। কিন্তু উনি বাপসুর স্মারকলিপি গ্রহণ না করায় বাপসু বুধবার স্বাস্থ্য শিক্ষা ডিজির ভবনের সামনে মানববন্ধন করে। মানববন্ধন শেষে তারা স্বাস্থ্য শিক্ষা ডিজির রুমের সামনে দাবি আদায়ের জন্য ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান করে।
মানববন্ধনে নেতারা বলেন, ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে এ দেশে সর্বপ্রথম ফিজিওথেরাপি পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। আজ এই পেশা বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। সমস্যাগুলো সমাধানের লক্ষ্যে বিগত কয়েক বছর ধরে আমাদের আন্দোলন চলে আসছিল। আমাদের দাবিগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম দাবিটি ছিল স্বতন্ত্র ফিজিওথেরাপি কলেজ বাস্তবায়ন। সেই লক্ষ্যে ২০০৯ সালে টানা ৫২ দিনের অবস্থান কর্মসূচির পর মহাখালীর সাততলা বস্তিতে বরাদ্দকৃত জায়গায় ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করা হয়। কিন্তু নানা ধরনের অশুভ তৎপরতার কারণে আমাদের প্রিয় ফিজিওথেরাপি কলেজটি এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
তারা বলেন, পাশকৃত ফিজিওথেরাপিস্টদের এক বছর ইন্টার্নি করতে হয়। ইন্টার্নির সময়ও তাদেরকে সরকারি ভাতা প্রদান করা হয় না। এমনকি এই করোনা মহামারির মধ্যেও ইন্টার্ন ফিজিওথেরাপিস্টরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তারপরেও তারা এখন পর্যন্ত কোন ধরনের সরকারি ভাতা পাচ্ছেনা। এখন পর্যন্ত প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী স্নাতক শেষ করে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ‘ফিজিওথেরাপিস্ট’ হিসেবে জাতির সেবায় নিয়োজিত আছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি চাকরির ব্যবস্থা হয়নি।
পরে তারা স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজির কাছে ৭ দফা দাবি উত্থাপন করে। দাবিগুলো হলো, অতিসত্বর ‘বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিওথেরাপি’র ভবন নির্মাণ বাস্তবায়ন করতে হবে। ভবন নির্মাণ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত অস্থায়ী ক্যাম্পাসে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে হবে। অনতিবিলম্বে সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে ফিজিওথেরাপিস্টদের প্রথম শ্রেণীর পদ সৃজন ও নিয়োগ প্রদানের আদেশ দিতে হবে। ফিজিওথেরাপি শিক্ষায় ভর্তি পরীক্ষার জন্য ন্যূনতম জিপিএ (এসএসসি+এইচএসসি) ০৯.০০ নির্ধারণ করতে হবে। একইসাথে সরকারি ও বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদফতর নিয়ন্ত্রিত ‘সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার’ মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিষয়ভিত্তিক পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বিষয়ভিত্তিক পর্যাপ্ত শিক্ষক থাকা বাধ্যতামূলক করতে হবে। সকল জেলা-উপজেলা পর্যায়ে স্বতন্ত্র ফিজিওথেরাপি বিভাগ ও জনবল নিয়োগ দিতে হবে এবং বাংলাদেশে ফিজিওথেরাপি শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি পর্যায়ে উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
সূত্রঃ নয়া দিগন্ত