করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শেষ না হতেই এবার যুক্তরাষ্ট্রে আসছে ‘টুইনডেমিক’ নামে একটি নতুন রোগের আতঙ্ক। মার্কিন চিকিৎসকেরা আগাম ইনফ্লুয়েঞ্জার ভ্যাকসিন নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন দেশের জনগণকে। তবে এই ভ্যাকসিন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে কোনো কাজে দেবে না বলেও জানিয়েছেন তারা।
মার্কিন গবেষক ও চিকিৎসকরা বলছেন, আমরা ইনফ্লুয়েঞ্জার ভ্যাকসিন নিতে বলছি। কারণে এটি শুধু এ ধরনের রোগ ঠেকাবে। টুইনডেমিক একটি ইনফ্লুয়েঞ্জা ধরনের ফ্লু। তবে আতঙ্কের সবচেয়ে বড় বিষয় হলো টুইনডেমিক ও কোভিড ১৯’র উপসর্গ প্রায় এক রকম। রোগীর শরীরে উপসর্গ দেখে কী হয়েছে তা বলা বেশ কঠিন। তাই আমরা আগাম ভ্যাকসিন নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।
সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়টিকে যুক্তরাষ্ট্রে ‘ফ্লু সিজন’ বলা হয়। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এ রোগের বিস্তার হয়। দেখা দেয় জ্বর-ঠাণ্ডা-কাশির মতো প্রকোপ। এদিকে এমনিতেই কোভিড-১৯ রোগের কারণে নাজেহাল মার্কিন অবস্থা। এ পর্যন্ত দুই লাখ চার হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। এর মধ্যে আবার টুইনডেমিক সিচুয়েশন বিপদে ফেলে দিতে পারে দেশকে।
কীভাবে টুইনডেমিক প্রকোপ ছড়ায়ঃ
সংক্রামকব্যাধি বিশেষজ্ঞেরা বলেছেন, এ রোগ হলেও মানুষ বলতে পারছেন না, তাদের অসুস্থতা কিসের। এর সাধারণ উপসর্গ হল জ্বর, সর্দিকাশি, প্রবল ঠান্ডা লাগা এবং শ্বাস নিতে কষ্ট। কোভিডে আলদা করে গন্ধ, স্বাদের মতো অনুভূতি চলে যায়। কিন্তু করোনা আক্রান্ত সকলেরই যে আবার স্বাদ-গন্ধ চলে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দিচ্ছে, তেমনটাও নয়। আবার ফ্লুয়েও অনেক সময় ঠান্ডা লেগে নাক বন্ধ হয়ে যায়, জিভের স্বাদ চলে যায়। অতএব, করোনা-পরীক্ষার রিপোর্ট না-পাওয়া পর্যন্ত রোগ নির্ণয় করা বেশ মুশকিল।
জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক ব্যাধি বিভাগের পরিচালক গ্যারি সাইমন বলেন, ‘এ বছরটা ভয়ানক কঠিন হতে চলেছে। হয় ফ্লু, না-হলে করোনা।’
টুইনডেমিক কাটানো যাবে কীভাবে
করোনাবাইরাস থেকে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের প্রকোপ সামলানো তুলনামূলক সহজ। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে কোভিডের তুলনায় সংক্রমিত হলে দ্রুত উপসর্গ দেখা দেয় এক থেকে চার দিনের মধ্যেই। রোগ দ্রুত ধরা পড়লে, দ্রুত-চিকিৎসা সম্ভব। তা ছাড়া, উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগে পর্যন্ত কোনো ফ্লু-রোগীর থেকে অন্য কেউ আক্রান্ত হতে পারেন। তার পরে আর সংক্রমণ ঘটে না। করোনা হলে দুসপ্তাহ বাদেও উপসর্গ দেখা দিতে পারে। আবার উপসর্গ দেখা দেওয়ার ১০ দিন বাদেও রোগীর থেকে অন্য কেউ সংক্রমিত হতে পারে। অর্থাৎ কোভিড-১৯ আরও বেশি সংক্রামক ব্যাধি।
জনস হপকিন্স হাসপাতালের সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ অ্যারন মিলস্টোন বলছেন, ‘প্রয়োজনে অতিরিক্ত সাবধানী হোন। মনে হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।’
সূত্রঃ আমাদের সময়