কতদিন পর পুনরায় করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে?

0
416

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন আসার পর একই মানুষের অল্প সময়ের ব্যবধানে একাধিকবার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ বেড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্য মতে, ওমিক্রনের প্রাথমিক উপসর্গগুলো দেখে বোঝা যায় যে, অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টগুলোর তুলনায় ওমিক্রনে  পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। অর্থাৎ যারা আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তারা সহজেই ওমিক্রনে আক্রান্ত হবেন।

করোনায় পুনরায় আক্রান্ত হওয়া কী?

ডঃ মনোজ গোয়েল, ডিরেক্টর, পালমোনোলজি, ফোর্টিস মেমোরিয়াল রিসার্চ ইনস্টিটিউট, গুরুগ্রাম বলেছেন, “পুনঃসংক্রমণকে সংজ্ঞায়িত করা হয় এমনভাবে যে, যখন এমন রোগীর মধ্যে যখন করোনা সংক্রমণের পুনরাবৃত্তি ঘটে যার পূর্বে করোনা হয়েছিলো।

লক্ষণবিহীন সংক্রমণের সম্ভাবনার কারণে অনেকসময় পুনরায় সংক্রমণের সঠিক বিষয় জানা যায় না৷”

সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) এর মতে, “কভিড-১৯ যে ভাইরাসের কারণ হয়, সেই ভাইরাসে পুনঃসংক্রমনের অর্থ হল একজন ব্যক্তি সংক্রমিত হয়েছিলেন, সুস্থ হয়েছিলেন এবং পরে আবার সংক্রমিত হয়েছিলেন৷ মার্কিন স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, কভিড-১৯ এর পরে পুনরায় সংক্রমণ ঘটে, তবে আরও গবেষণার অপেক্ষা রয়েছে।

কত তাড়াতাড়ি মানুষ পুনরায় সংক্রমিত হচ্ছে?

করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন গবেষক বিভিন্ন তথ্য নিয়ে এসেছেন। যদিও ২০২১ সালের অক্টোবরের একটি সমীক্ষা প্রকাশ করে যে যারা করোনা থেকে সেরে উঠেছেন তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রায় ৩ মাস থেকে ৫ বছর স্থায়ী হতে পারে, অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা 8 মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কতদিন স্থায়ী হয়?

যারা করেনো সংক্রামিত এবং করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। যার অর্থ তারা সংক্রমণের পুনরাবৃত্তি থেকে নিরাপদ। তবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকরা।

যদিও পূর্ববর্তী সংক্রমণ থেকে অনাক্রম্যতা কতক্ষণ স্থায়ী হয় তা নির্ধারণ করা কঠিন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন হতে পারে। এটি কয়েক মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। প্রতিটি ব্যক্তির ইমিউনোলজিক সিস্টেম কীভাবে ভাইরাসের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখায় তার উপর এটি নির্ভর করে।

অনাক্রম্যতা হ্রাসের পিছনে কারণ:

বর্তমানে, বিজ্ঞানী এবং চিকিৎসকরা অনিশ্চিত যে প্রাকৃতিক সংক্রমণ বা ভ্যাকসিনের অনাক্রম্যতা কতক্ষণ স্থায়ী হয়। প্রাকৃতিক অনাক্রম্যতার সময়কাল সঠিকভাবে জানা না গেলেও, ডাঃ গোয়েল পরামর্শ দেন যে এটি ৩ থেকে ১২ মাস স্থায়ী হতে পারে। তিনি মনে করেন যে প্রতিরক্ষামূলক অ্যান্টিবডি এবং টি কোষের মাত্রা কমে যাওয়ার কারণে কিছু সময়ের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরে ধীরে হ্রাস পায়।

সংক্রমণ বা টিকা দেওয়ার পরে, আপনার শরীর একটি শক্তিশালী ইমিউন প্রতিক্রিয়া তৈরি করে এবং অ্যান্টিবডিগুলির সাহায্যে সম্ভাব্য ভবিষ্যতের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। যাইহোক, যখন আপনার শরীর দীর্ঘ সময়ের জন্য ভাইরাল প্যাথোজেনের সংস্পর্শে আসে না, তখন অ্যান্টিবডিগুলির উত্পাদন ধীর হয়ে যায়, কোষ এবং প্রোটিনগুলি ধীরে ধীরে হ্রাস পায় যার ফলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পেতে শুরু করে।

চিকিৎসকের মতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাসের পিছনে প্রধান কারণ হল বিভিন্ন করোনা রূপের আবির্ভাব।

কখন একজনের পুনরায় করোনা সংক্রমণের প্রবণতা বেশি?

ভাইরাস থেকে কে কম বা বেশি সুরক্ষিত তা নির্ধারণে স্বাস্থ্যবিধি কতটা মেনে চলা হচ্ছে তা মুখ্য ভূমিকা পালন করে। যে ব্যক্তি স্বাস্থ্যবিধি ঠিকভাবে মেনে চলে না বা যারা ভ্যাকসিন নেয়নি এবং যাদের বয়স বেশি, ডায়াবেডটিস রোগী , হৃদরোগ, ফুসফুসের রোগ এবং ক্যান্সারের রোগীদের পুনরায় সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি বলে বলছেন চিকিৎসক।

সূত্র: দ্যা টাইমস অব ইন্ডিয়া 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে