থাইরয়েড গ্লান্ডের ক্যানসার একটি জটিল রোগ। থাইরয়েড গ্রন্থির কোনো অংশের কোষ সংখ্যা অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পেলে তাকে থাইরয়েড ক্যানসার বলে। সঠিক সময়ে রোগ শনাক্ত করে চিকিৎসা নিতে পারলে থাইরয়েড ক্যানসার থেকে নিরাময় সম্ভব।
থাইরয়েড ক্যানসারের লক্ষণ ও চিকিৎসা নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন সিওমেক হাসপাতালের নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ এবং হেড-নেক সার্জন রেজিস্ট্রার, ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী।
ক্যানসারে আক্রান্ত পুরুষদের মধ্যে প্রায় ৫.৪ শতাংশ এবং নারীদের মধ্যে ৬.৫ শতাংশ থাইরয়েড ক্যানসারভুক্ত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এর কারণ অস্পষ্ট।
থাইরয়েড ক্যানসারে যে লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে-
গলার সম্মুখভাগে ফুলে ওঠা এবং এই ফোলা খাবার গ্রহণে ঢোক গেলার সময় ওঠানামা করে। ক্যানসার হলে সেই ফোলা অংশটি বেশ শক্ত হয়। সঙ্গে ওজন কমে যায়।
থাইরয়েড গ্রন্থির আশপাশে একটি বা একাধিক টিউমার হতে পারে; উভয় পাশে টিউমার হতে পারে। আশপাশের লিম্ফ নোডগুলো ফুলে উঠতে পারে।
থাইরয়েড টিউমার স্নায়ুকে আক্রান্ত করলে গলার স্বর পরিবর্তন হতে পারে। গলার স্বর মোটা বা ফ্যাসফ্যাসে হতে পারে।
থাইরয়েড টিউমার শ্বাসনালির ওপর চাপ সৃষ্টির ফলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
এ সময় খেয়াল রাখতে হবে বংশে বা পরিবারে কারও থাইরয়েড ক্যানসারের ইতিহাস আছে কিনা।
থায়রয়েড ক্যানসার এমন একটি রোগ, যা সময়মতো চিকিৎসা করলে ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ সম্ভব। তবে অবশ্যই সময়মতো সম্পূর্ণ চিকিৎসা করাতে হবে। গলার সামনে ফুলে উঠলে যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি একজন নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞকে দেখানো উচিত। তিনি প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা (আলট্রাসনোগ্রাম, থাইরয়েড ফাংশন টেস্ট এবং সবচেয়ে স্পেসিফিক FNAC) করে দেখবেন এটা কোন ধরনের রোগ। থাইরয়েড ক্যানসারের ক্ষেত্রে কার্যকরী চিকিৎসা হচ্ছে অপারেশন বা সার্জারি করা। পরীক্ষার পর আক্রান্তের ধরনের ওপর নির্ভর করবে থাইরয়েড গ্রন্থির কতটুকু কাটতে হবে। অপারেশনের পর এর প্রকারভেদের ওপর নির্ভর করে নির্দিষ্ট ডোজের রেডিও আয়োডিন থেরাপি নেওয়া লাগতে পারে। রোগীর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হচ্ছে অপারেশনের পর চিকিৎসকের অধীনে সারা জীবন ফলোআপে থাকতে হবে।