কোনো রোগ বা শারীরিক অবস্থার লক্ষণ বা পরিণতি হিসেবে নিম্ন রক্তচাপ চিহ্নিত হতে পারে। রক্তচাপ যখন শরীরের সব জায়গার রক্ত পৌঁছানোর জন্য যথেষ্ট হয় না, তখন এ অবস্থাকে নিম্ন রক্তচাপ বলা যেতে পারে।
কারণ
রক্তের পরিমাণ কমে গেলে, রক্তের ঘনত্ব বেড়ে গেলে, রক্তের জলীয় অংশ কমে গেলে অর্থাৎ কার্যকর প্রবহমান রক্তের আয়তন হ্রাস পেলে নিম্ন রক্তচাপ দেখা দেয়। আবার হৃিপণ্ডের কার্যক্ষমতা কমে গেলে, কিছু হরমোনের ঘাটতি হলেও রক্তের চাপ কমে যায়। এ ক্ষেত্রে সমস্যা দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। বিভিন্ন রোগের জটিলতা হিসেবে এমন হয়ে থাকে।
দীর্ঘমেয়াদি অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, হরমোনজনিত রোগ নিম্ন রক্তচাপের কারণ হতে পারে। রোগী দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা ইত্যাদি সমস্যার কথা বলে থাকেন। সুনির্দিষ্ট কারণ চিহ্নিত করে চিকিৎসার মাধ্যমে এর সমাধান সম্ভব। বিভিন্ন পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।
শরীরে পানির ঘাটতি গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। ডায়রিয়া, বমি, অতিরিক্ত ঘাম—এসবই পানি ও লবণের ঘাটতি সৃষ্টি করে। এমন অবস্থায় যথেষ্ট পরিমাণ তরল, পানি, স্যালাইন গ্রহণ না করলে রক্তপ্রবাহ ক্ষীণ হয়ে পড়ে। রক্ত সঞ্চালন যথাযথ না থাকার ফলে বিভিন্ন অঙ্গের কাজ ব্যাহত হয়। কিডনি, মগজ, হৃিপণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সময়মতো রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক না হলে মৃত্যুঝুঁকি রয়েছে।
যেকোনো কারণে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি রক্ত যদি শরীর থেকে হারিয়ে যায়, সে ক্ষেত্রেও রক্তচাপ হ্রাস পায়। এ ক্ষেত্রে দ্রুত রক্তের ঘাটতি রক্তের মাধ্যমে পূরণ করা একটি মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি।
করণীয়
নিম্ন রক্তচাপ যখন হাইপোভলিউমিক শকের জন্য হয় তখন জরুরি ভিত্তিতে রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক করতে হবে। ডায়রিয়া, বমি, রক্তক্ষরণ—এসবের ফলে রোগী শকে চলে যেতে পারে। হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় দ্রুত চিকিৎসা জীবন রক্ষার জন্য জরুরি।
অনেক মানুষের রক্তচাপ মেপে স্বাভাবিকের চেয়ে কম পাওয়া যায়। যদি এর সঙ্গে অন্য কোনো লক্ষণ না থাকে এবং স্বাভাবিক জীবনযাপনে কোনো সমস্যা না থাকে, তবে এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। অন্য সমস্যা মনে হলে চিকিৎসকের পরামর্শে পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।