বাংলাদেশে ২০৪০ নাগাদ ডিম্বাশয়ে ক্যানসার আক্রান্ত ৬০% বাড়ার আশঙ্কা

0
191
Spread the love

নারীরা সাধারণত যে ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন তার মধ্যে একটি হলো ওভারিয়ান বা ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার। সাধারণত পঞ্চাশোর্ধ নারীরা এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ডিম্বাশয়ে ক্যানসারে আক্রান্তের হার প্রায় ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।

গতকাল মঙ্গলবার অনলাইনে অনুষ্ঠিত ‘এভরি ওম্যান স্টাডি’ শীর্ষক গ্লোবাল মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ক্যানসার বিষয়ক অভিজ্ঞজন একত্রিত হন।

বিশ্ব গাইনোকোলজিক অনকোলজি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ডিম্বাশয় তথা ওভারিয়ান ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর অভিজ্ঞতা নিয়ে করা সমীক্ষার আলোকে আলোচনা করা হয়। ‘এভরি ওম্যান স্টাডি’ নিম্ন এবং মধ্যম-আয়ের দেশের সংস্করণ ২০২৪ সালে প্রকাশিত হবে। এতে বাংলাদেশের অবস্থা নিয়ে একটি প্রতিবেদন থাকবে।

গুরুত্বপূর্ণ প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ, ওয়ার্ল্ড ওভারিয়ান ক্যানসার কোয়ালিশনের প্রোগ্রাম এবং ‘এভরি ওম্যান স্টাডি’-এর প্রধান ফ্রান্সেস রেইড, অনকোলজি ক্লাবের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ডা. মোস্তাফা আজিজ সুমন এবং ‘এভরি ওম্যান স্টাডি’ এর বাংলাদেশের দেশীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. শাহানা পারভীন। ক্যানসারবিডি ডট নেট-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন রাফে সাদনান আদেল এবং ওয়ার্ল্ড ওভারিয়ান ক্যানসার কোয়ালিশনের সিইও ক্লারা ম্যাকয়ের সভাপতিত্বে অতিথিরা নারীর সবচেয়ে প্রাণঘাতী ক্যানসার নিয়ে আলোচনা করেন।

তারা জানান , ওভারিয়ান ক্যানসার কোনো স্ক্রিনিং পরীক্ষা নেই। এছাড়াও নারীদের সুস্থতার বিষয়ও নানান গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আলোচনায় আসে।

ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সচেতনতা বাড়ানো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি অর্জনের জন্য নির্দিষ্ট গবেষণা এবং সুচিন্তিত কৌশল প্রয়োজন। তিনি আশাবাদী যে, ওভারিয়ান ক্যানসারের এই ‘এভরি ওম্যান স্টাডি’ সফল হবে এবং মানুষের উপকারে আসবে।

গবেষণার প্রধান ফ্রান্সেস রেইড বলেন, ‘ডেটা সংগ্রহ এখনো চলমান থাকলেও সংগৃহীত তথ্যে বোঝা যায়, দেশের পরিস্থিতি উন্নয়ন সম্ভব। এই তথ্য বাংলাদেশের রোগীদের জ্ঞান বাড়াতে এবং চিকিৎসকদের নীতি ও চিকিৎসাকে আরও উন্নত করতে সাহায্য করবে।’

অধ্যাপক ডা. শাহানা পারভীন বলেন, অবস্থার পরিবর্তন করার জন্য তথ্য দরকার। এই তথ্য শুধু ক্যানসার রেজিস্ট্রি নয়, বরং নারীদের বাস্তব অবস্থা এবং তারা কীভাবে, কখন চিকিৎসকের কাছে আসে সেসব তথ্য জানতে হবে। তাহলেই প্রতিকারের  উপায় বের হবে। ওয়ার্ল্ড ওভারিয়ান ক্যানসার কোয়ালিশনের সিইও ক্লারা ম্যাকয় বলেন, ‘শুরু থেকেই আমাদের লক্ষ্য ছিল এমন একটি গবেষণা এবং ফলাফল তৈরি করা , যা কেবল বিশ্বব্যাপী না বরং বিভিন্ন দেশীয় সংগঠনের মাধ্যমে দেশীয় তথ্য সংগ্রহ করে ও সচেতন বাড়ানো যায়। যাতে তৃণমূল পর্যায়ের নারীরা সচেতন হয় এবং সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার সুযোগ পায়।’

অনুষ্ঠানে জানানো হয় ইন্টারন্যাশনাল গাইনোকোলজিক ক্যানসার সোসাইটির সহযোগিতায় ওয়ার্ল্ড ওভারিয়ান ক্যানসার কোয়ালিশন বর্তমানে ডিম্বাশয় ক্যানসারের রোগে আক্রান্ত নারীদের অভিজ্ঞতা নিয়ে ২৪টিরও বেশি নিম্ন এবং মধ্যম-আয়ের দেশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে। বাংলাদেশ এই গবেষণায় অংশগ্রহণের জন্য স্বেচ্ছাসেবায় এগিয়ে আসে।

অনুষ্ঠানের সহ-সভাপতি এবং গবেষণার তত্ত্বাবধান কমিটির সদস্য রাফে সাদনান আদেল জানান, গবেষণার ফলাফল ক্যানসার প্রতিরোধ এবং এর চিকিৎসার জন্য অ্যাডভোকেসি করতে সাহায্য করবে। নতুন গবেষণা সম্প্রসারিত রোগী সহায়তার জন্য অর্থ সংগ্রহ এবং সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারণা জোরদার করতেও সাহায্য করবে।

২০১৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ক্রাব) কার্যালয়ে ক্যানসারবিডির উদ্বোধন করেন তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে