ক্যান্সারে আক্রান্ত—কথাটা শুনলেই রোগীর মন ভেঙে যায়। অনেকে তো মানসিকভাবে একেবারেই ভেঙে পড়ে। ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করার জন্য শারীরিক ছাড়াও মানসিকভাবে ফিট থাকা চাই। এই পরিস্থিতিতে কাউন্সেলিং রোগীর জন্য ভীষণ প্রয়োজন।
কারণ এ অবস্থায় রোগীকে কাউন্সিলর নানাভাবে সাহায্য করতে পারেন।
আর সেসব হচ্ছে-
– আকস্মিক শারীরিক পরিবর্তনের যে ধাক্কা তা গ্রহণ করে মোকাবেলা করতে সাহায্য করা।
– আতঙ্কিত না হয়ে রোগীকে সামলে নিতে সাহায্য করা।
– উদ্বেগ ও হতাশা কমাতে সাহায্য করা।
– ব্যথা ও ক্লান্তির সঙ্গে মোকাবেলা করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে সাহায্য করা।
– এ সময় রোগী নিজের শারীরিক অবস্থা, গঠন, অবয়ব, পারিবারিক সম্পর্ক, যৌন সম্পর্ক—এসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তীব্র টানাপড়েনে ভোগে। এই অবস্থাগুলো মেনে নিয়ে কিভাবে চলা যায় সে ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দেওয়া।
– এ সময় রোগী তার ভবিষ্যৎ নিয়ে ভয়াবহ রকমের দুশ্চিন্তায় থাকে। এই দুশ্চিন্তা লাঘব করতে সাহায্য করা।
– মানসিক অবস্থার যে নাজুক পরিস্থিতি, সেগুলো লাঘব করার পাশাপাশি রোগীর সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে অবগত করা হয় যাতে পরবর্তী ধাপের চিকিৎসায় বিষয়টি মাথায় রেখে আগ্রসর হওয়া যায়।
– রোগীর পরিবারের সদস্য, নিকটাত্মীয়, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গেও কথা বলে রোগীর প্রতি যা যা করণীয় তা বুঝিয়ে বলা।
– কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে রোগীর সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং কাছের মানুষদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রোগীর কর্মক্ষেত্র, ক্যারিয়ার এবং অর্থনৈতিক উদ্বেগের বিষয়গুলো রোগীর পক্ষে গুছিয়ে নিয়ে আসা হয়। যেহেতু বিষয়গুলো কনফিডেনশিয়াল সে ক্ষেত্রে অবশ্যই রোগীর অনুমতিক্রমে রোগী যাঁকে দায়িত্ব দিতে চায় তাঁকেই দেওয়া।
– সুগঠিত ও সুপরিকল্পিত আলোচনার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করা।
– চিকিৎসার শেষ প্রান্তে ভালো-মন্দ কী কী হতে পারে এগুলো সুষ্ঠু কৌশলে আলোচনা করে তাকে সব দিক থেকে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করা হয়। এর পাশাপাশি নেতিবাচক ও অযৌক্তিক বিশ্বাস মোকাবেলা করতে সাহায্য করা।
– ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি ভুল ধারণাগুলো দূর করতে সাহায্য করা হয়।
– ক্যান্সার থেকে আরোগ্য লাভ করার পরও রোগীর মধ্যে ক্যান্সার ফিরে আসার ভয় কাজ করে। এই ভয় কাটানোর কৌশলগুলো শিখিয়ে দেওয়া।
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. রুবাইয়াৎ ফেরদৌস
সহকারী অধ্যাপক, সাইকিয়াট্রি বিভাগ
ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল